পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈকুণ্ঠের উইল ܣܠ অভিমান করে উদাসীন হয়ে গেল মা, আমি একলা কি করে কি করুত্ব ? বলিয়া সে অকস্মাৎ উচ্ছসিত হইয়া কীদিয়া ऐठिंब्न । ভবানী নিজেও আর সামলাইতে পারিলেন না । কঁাদিয়া ফেলিলেন । অনেকক্ষণ নিঃশব্দে থাকিয়া শেষে আঁচলে চোখ মুছিয়া অশ্রুজড়িত স্বরে জিজ্ঞাসা করিলেন, সে কি এ খবর পেয়েছে গোকুল ? গোকুল তৎক্ষণাৎ কহিল, পেয়েছে বই কি মা। কে তাকে খবর দিল । কে যে তাহাকে বাড়ির এই দুঃসংবাদ দিয়াছে, গোকুল নিজেও তাহ জানিত না । মাষ্টারমশায়ের পুত্র হারাণের সম্বন্ধে তাহার নিজেরও সন্দেহ জন্মিয়াছিল। তথাপি কেমন করিয়া যেন নিঃসংশয়ে বুঝিয়া বসিয়াছিল-বিনোদ সমস্ত জানিয়াশুনিয়াই শুধু লজ্জা ও অভিমানেই বাড়ি আসিতেছে না। সে মায়ের মুখপানে চাহিয়া কহিল, খবর সে পেয়েছে মা । বাবা চিরকালের মত চলে গেলেন-এ কি সে টের পায় নি ? আমার মত তার বুকের ভেতরেও কি হা হা করে আগুন জ্বলে যাচ্ছে না ? সে সব জেনেচে মা, সব জেনেচে । ভবানী ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া অবশেষে যখন কথা কহিলেন, গোকুল আশ্চৰ্য্য হইয়া লক্ষ্য করিল-মায়ের সেই অশ্রুগদগদ কণ্ঠস্বর আর নাই। কিন্তু তাহাতে উত্তাপও ছিল না। সহজ কণ্ঠে বলিলেন, গোকুল, তাই যদি সত্যি হয়। বাবা, তবে আমন ভায়ের জন্যে তুই আর দুঃখ করিস নে। মনে করু, আমাদের বংশে আর ছেলেপিলে নেই। যে রাগের বশে মারা