পাতা:সিমার - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খতিব বললেন, তা বলে লেখাপড়া শিখেছে বলে সে আমার ধর্ম তুলে অপমান করবে ? রুস্তম বললে, সে তো অপমান করেনি । সে তার আপন মত বলেছে, আপনি আপনাব কথা বলেছেন, এতে অপমানেবা কি আছে ? --নেই ? সে নাস্তিকের মতো আচবাণ কবছে । জানতাম সে তা করবে । কিন্তু শিকদারের কথা ঠেলতে পারলাম না, নইলে গাজীপুরে কি লোক ছিল না ? রুস্তম বললে, নিশ্চয় আপনার পছন্দ মতো লোক ছিল বৈকি ! কিন্তু তাদের উপব হামিদুলের ভবাসা ছিল না । খতিব বললেন, হামিদুলের উপরও কি ভরসা করা যায় ? সে তো মস্ত হঠকারী । আমার ইচ্ছে ছিল তারিকৎ হাজীর সাথে রাবেয়ার নিকে হয়ে যাক । বুড়া হাজী এই জিন্দেগীতে আর রাবেয়াকে ফেরত দিত না । রাবেয়া সহসা বলে উঠল, আমাব সেই ভালো ছিল খতিব সাহেব ! ঐ পাষণ্ড বর্বরের সংসারে আমার আব্ব ফিরে যেতে এতটুকু প্রবৃত্তি হয় না । হামিদুল একবার চমকে উঠে রাবেযার ক্রুদ্ধ অপমানিত নিঃসহায় চােখের দিকে চেয়ে দেখে চোখ নামিযে বুকের উপর মাথা এলিয়ে দিল, মনে হলো ঘাড় থেকে মাথাটা এক কোপে কে যেন বুলিয়ে দিয়েছে। আমি খতিব সাহেবের কথার সূত্র ধরে বললাম, আমিও যদি রাবেয়াকে ফেরত না দিই ! হামিদুল মাথা তুলল। এত করুণ, এতটা পুড়ে যাওয়া মুখচ্ছবি কখনো দেখি নি। এ যেন এক বৃদ্ধের প্রতিমূর্তি, অন্তদাহে ঝলসিত, বজ্ৰপাতে দগ্ধ মমািহত খাঁ খাঁতাল-তামালের শুখা-শূন্য চেয়ে-থাকা দিগন্ত, চেয়ে দেখলেই বুকটা খালি হয়ে श्य | সে বললে, ফেবত না দাও, কখনো জোর করব না । রাবেয়া তো তোমারাও, তুমিও তাকে নিচ্ছ, এই ভেবে আমি কি সান্তুনা পাব না ? বললাম, দেখছেন খতিব সাহেব, ড্রামা, মানে নাটক কেমন জমে উঠেছে। আসলে ও ফেরত পাবার আশাতেই আমার কাছে এসেছে, ফের বলছে সাত্মনার কথা। তুই কখনো নিজেকে এতটুকু চিনতে পারিস নি হামিদুল ! যে দুঃখ এতটুকু সাইবার যো এবং যোগ্যতা নেই, তুই বরাবর সেই দুঃখকে আপন দোষে বয়ে এনেছিস । রুস্তম বললে, মানুষ তাই নিয়ে আসে। নিজের দুঃখ নিজেই বয়ে আনে । এই তার আসল ট্রাজেডি। মুসলমানের তালাকের মধ্যে পুরাতন সেই গ্ৰীক ট্রাজেডির একটা পাকা রস রয়েছে-চরিত্রের চোরা দুর্বল ছিদ্র পথ ধরে অদৃশ্য জীবাণুর 8N,