পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফলে পিছনের সিটের ডান দিকের কোণ ঘেষে যে প্রৌঢ় বয়সী। ভদ্রলোকটি বসেছিল, চোট লেগে অজ্ঞান হয়ে পাশের সুন্দরী তরুণীটির কোলে ঢলে পড়ে-সিনেমার চমকপ্রদ ঘটনার মধ্যে আসল রসালে দৃশ্যটির মতই ! সব গাড়ী থেমে যায়। দেখতে দেখতে প্রকাণ্ড এক লোকারণ্য সেখানে জমাট বেঁধে ওঠে । কি বিরাট ছন্দে কি রকম আশ্চর্য্য মসৃণ গতিতে সহরের এই একটি রাজপথে জীবনের স্রোত বয়ে চলেছিল, কি বিচিত্র ভাবে তাতে মেশানো ছিল নানা বিভেদ আর সামঞ্জস্য, ব্যাহত হয়ে থেমে যেতে সেটা যেন স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আগে ছিল নানা আওয়াজের মেশাল দেওয়া একটানা গুঞ্জন ধ্বনি, এখন তার চেয়ে জোরালো হয়ে ওঠে শুধু মুখর মানুষের মিলিত কলরব । কত অল্প সময়ের মধ্যেই যে আবার ঠিক আগেকার অবস্থায় ফিরে যায় রাজপথটি । দুর্ঘটনা গুরুতর নয়। একজনও মরেনি, হাসপাতালে পরে কারো মরবার সম্ভাবনাও নেই । কয়েকজন আহত হয়েছে আর কমবেশি জখম হয়েছে খান চারেক গাড়ী।।...বেশী চোট লেগেছে সেলুন গাড়ীটার ড্রাইভার আর যে মেয়েদি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে তার—তবে তাদের আঘাতও তেমন মারাত্মক কিছু নয়। সেলুন গাড়াটার পিছনের সিটের ভদ্রলোকের মাথার পিছন দিকটা দেখতে দেখতে ফুলে ঢোল হয়ে উঠেছে, একখানা হাত গেছে মচকে। " এম্বুলেন্স এসে পড়ার আগেই পুলিশ ভিড়কে একপাশে ঠেলে দিয়ে রাস্তার ওপাণ দিয়ে গাড়ী চলাচলের ব্যবস্থা চালু করে দেয়। : M