পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ললনার কৌতুহলটা যে কত প্রচণ্ড কেশব তা টের পায়। কিন্তু মাইনে করা ড্রাইভারের কাছে কৌতুহলটা একটু চেপেই রাখতে হয়। সিনেমায় বড়লোক অভিজাত ঘরের মেয়ে এভাবে এক ড্রাইভারের সঙ্গে গ্রামাঞ্চলে বেড়াতে গেলেই তার প্রেমে হাবুডুবু খায়। কিন্তু বাস্তব জগতের মেয়েরা অত বোকাও নয়, সন্তাও নয় । মাইনে করা ড্রাইভারও মানুষ। তার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করা, ভদ্রঘরের ছেলে বলে তাকে আপনি বলা এক জিনিষ। মানুষ বলেই তার প্রেমে পড়তে হলে বড় বিপদের কথা হয় । তবে মাইনে করা ড্রাইভার যদি মহাপুরুষ হয় সেটা আলাদা কথা । মোটর গাড়ীর মালিকের মেয়েকে প্রেমের টানে পাগলিনী করার জন্য ক’জন মহামানুষ মানুষকে এগিয়ে নেবার গুরু দায়িত্ব আর কীর্ত্তব্য বাতিল করে মাইনে করা ড্রাইভার হয়েছে সেটা অবশ্য গবেষণার ব্যাপার । খেয়াল ? নতুনত্বের পিপাসা ? বিকার ? একটা মোটর গাড়ীর মালিকের মেয়ে হয়েও ওই ঘরবাড়ীর মত নিজেকে পুরুষের সম্পত্তি বলে জানার ফলে দিশেহারা হয়ে প্রতিহিংসা নেওয়া ? স্বাধীনতার সুগার কোটিং করা দাসীপনায় তিক্ত জীবনে মুক্তি খোজার সন্ত্রাসবাদ ? কিন্তু তাকে প্রেম বলা কেন । প্রেম তো বিকার নয়, খেয়াল নয়, স্বার্থপরতা নয় । শুধু নারীপুরুষেই তো প্রেম হয় না। মানুষের জাতটাকে বাদ দিয়ে কোথায় তারা প্রেম করবে ? শুধু রাধা শুধু কৃষ্ণের মধ্যে পর্যন্ত প্রেম হয় না। তাদের প্রেমকে রূপ দেয় নিয়ন্ত্রিত করে মানুষের প্রেমের গৎ । কত কবি হাজার হাজার বছর ধরে আঁকড়ে ধরেছে শুধু নায়ককে আর নায়িকাকে, Ng A