পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাত আট দিনের খোচা খোচা গোপ দাড়ি । মাসে তার তিনচার বারের বেশী দাড়ি কামাবার সময় হয় কদাচিৎ ৷ কেশব বলেছিল, তা হলে তুমি দোকান চালােচ্ছ কি করে শরৎদা’ ? : চালাচ্ছি লোকসান দিয়ে । লোকসান দিয়ে শরৎ তার দোকান চালায় । এমনি তার লোকসান দেবার নেশা । তার মত ঘরের পয়সা লোকসান দিতে চেয়ে দ্বিতীয় কেউ কিন্তু আশেপাশে এরকম মনোহারী দোকান দিতে পারে নি। পাল্লা দেবার অনুযোগ এড়াতে রমেশ প্রায় দেড়শো গজ তফাতে ব্রজ দত্তের বাইরের ঘরে দোকান করার চেষ্টা করেছিল। কদিন পরে দেখা গিয়েছিল রাতারাতি কে যেন দোকানের ভিতরে বিষ্ঠা ছড়িয়েছে, বাইরের তালার উপরেও দল করে রেখেছে খানিকটা ওই জিনিষ । রমেশ তাতেও না দমায় তিন দিন পরে রাত্রিবেল তালা বন্ধ দোকানের ভিতরে পেট্রোলের আগুনে অৰ্দ্ধেক মাল পুড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল । সবাই অনুমান করেছিল কীর্ত্তিটা কার । কিন্তু কে কি বলবে, কে কি করবে ? শরৎ নিজে কিছুই করে নি, শুধু টাকা খরচ করেছিল। বেশ মোটা টাকাই খরচ করেছে, এসব কাজ অল্প পয়সা ঢেলে করানো যায় না । হোক লোকসান, তার মত মনোহারী দোকান শরৎ কাউকে কাছাকাছি খুলতে দেবে না ! শরতের দোকানে দু’পয়সার নস্য কিনে কেশব কাছেই দক্ষিণ দিকে বোসপাড়ার রাস্তায় ঢোকে । বোসপাড়ার ছাড়া ছাড়া ভাবে থেকে থোক ঘন বসতি। কাছাকাছি ঘোষা ঘোষি হয় তো আট দশটি বাড়ী, তার পরেই খানিকটা ফাকা মাঠ পুকুর বাগান। R