পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মায়া বলে, কিছু খাবে ? একটু দুধ খাও, কেমন ? কেশব হেসে ফেলে -দুধ খাব ৷ ঃ তা খাবে কেন, দুধ খেলে যে শরীরটা ভাল থাকবে । ওই আবার কালী আসছে। দু’দণ্ড ভাল করে কথা কইবার যে নেই। এগার বছরের কালী ইজের ফ্রক ছেড়ে শাড়ী ধরেছে। ডুরে শাড়ীর আঁচল লুটিয়ে বেণী দুলিয়ে এসে সে আবদার জানায়, খিদে পেয়েছে ঘুম পেয়েছে কাকীমা। কত রাধবে তুমি ? মায়া ঝংকার দিয়ে বলে, আ মরণ, রান্না বাকী আছে নাকি আমার ? সবাইকে ডেকে এনে জায়গা করে বোস, খেতে দিচ্ছি। ब्लर्छन उानिन् । ভাইবোনদের ডেকে আনতে কালী দালানের মধ্যে অদৃশ্য হতেই মায়া চট করে উঠে এসে আঁচল দিয়ে কেশবের মুখের ঘাম আর ক্লেদ মুছে নিতে নিতে বলে, বুকটা ঢিপ ঢিপ করছে। এ কাজ ছাড়তে হবে তোমাকে । জামাকাপড় ছেড়ে এসোগে । দালানে ওদের সবাইকে বলবে কি হয়েছিল, আমিও শুনব । তফাতে সরে গিয়ে বঁকা চোখে চেয়ে বলে, মদ খেয়েছে, না ? গন্ধ পেলাম ?

একটুখানি খেয়েছি, সামান্য ।

থামে লটকানো ল্যাম্পের আলো এমন আরও কাছ থেকে মুখে পড়েছে। চোখ দেখে মনে হয় কিসের আলো কিসের রান্নাবান্না ঘরসংসার আর কিসের বিশ্বব্রহ্মাণ্ড, সামান্য ওই মানুষটা ছাড়া তার কাছে কিছুরই অস্তিত্ব নেই। আহত ব্যাকুলতার ভাবটা কেটে যায় কয়েক মুহুর্ত্তে। কামড়ে ধরা ঠোঁটে একটু হাসিও ফোটে।