পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সঙ্গেই এরা মিনুর রিয়ে দেবে জেনে মায়ার সমস্যাটা জরুরী হয়ে উঠেছিল। মিনুর বিয়ের আগেই তাকে মনস্থির করে ফেলতে হত । তারা দু’জনে স্বাধীন মানুষ, এ জগতে কারো কোন ক্ষতি না করে পরস্পরকে ভালবেসেছে। তাদের সম্পর্কের গোপনতা শুধু তাদেষই সুবিধার জন্য । কলঙ্কের ভয় তার করে না । জানাজানি হলে তারা প্রকাশ্য ভাবেই একসঙ্গে বাস করবে। সম্ভব হলে আইনসঙ্গত ভাবে, সামাজিকভাবে । সে স্বার্থপর হোক, সারা জীবনের জন্য মায়ার দায়িত্ব নিতে তেমন উৎসাহ বোধ না করুক, এ হিসাবে তার ফাকি নেই। ভাল লাগুকি বা না লাগুক, জানাজানি হলে সে তো আর মায়াকে ফেলতে পারবে না । কিন্তু রঞ্জনের সঙ্গে মিনুর বিয়ের প্রস্তাব কলঙ্কের প্রশ্নটা অন্যদিক দিয়ে গুরুতর করে তোলে । এখন জানাজানি হোক, কলঙ্ক রটুক, সে হবে শুধু তাদের দু’জনের কলঙ্ক, দু’বাড়ীর দু’টি মানুষের । তারা দু’জন বাড়ী থেকে বিদায় নিলেই চুকে গেল। কিন্তু রঞ্জন আর মিনুর বিয়ে হলে একটা সম্পর্ক সৃষ্টি হবে দু’টি পরিবারের মধ্যে । কলঙ্ক তখন আর তাদের দু’জনের থাকবে না, তখন আঘাত গিয়ে লাগবে দু’টি পরিবারের গায়েই। তারা দু’জন চিরকালের জন্য চলে গেলেও লাগবে । অথচ এদিকে গোপনত বজায় রাখতে বাধ্য হলেই, জানাজানি হওয়াকে ভয় করলেই তার আর মায়ার সম্পর্ক দাড়িয়ে যাবে অন্যায়, অসঙ্গত । তাই কি করবে না করবে তাকে ঠিক করে ফেলতেই হয় মিনুর বিয়ের কথা পাকা হবার আগেই । So up