পাতা:আত্মচরিত (প্রফুল্লচন্দ্র রায়).djvu/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ট্যাক্স দিবে না—শাসনতন্ত্রের এই মলনীতি প্রতিষ্ঠিত করিতে ব্রিটিশ জাতিকে গহযুদ্ধ করিয়া রক্তস্রোত বহাইতে হইয়াছিল। আমার বহিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রতি যে নিবেদন ছিল, তাহা হইতে কয়েক ছত্র উদ্ধত করিতেছি। “ভারত-ব্যাপারে ইংলন্ডের গভীর অবহেলা ও ঔদাসীন্যের ফলেই ভারতের বর্তমান শোচনীয় অবস্থার উৎপত্তি ; ইংলণ্ড এ পর্যন্ত ভারতের প্রতি তাহার পবিত্র কতব্য পালন করে নাই। তোমরা গ্রেটরিটেন ও আয়লান্ডের ভবিষ্যৎ বংশধরগণ, ভারতে অধিকতর উদার, ন্যায়সঙ্গত ও সহদের শাসন নীতি অবলম্বনের জন্য তোমাদের দিকেই আমরা চাহিয়া আছি। সেই শাসননীতির উদ্দেশ্য কতকগুলি মামলী বলি হইবে না, তাহার উদ্দেশ্য হইবে ইংলণ্ড ও ভারতের মধ্যে ঘনিষ্ঠতর মৈত্রীর বন্ধন সথাপন। তোমাদের উপরই আমাদের সমস্ত আশা ভরসা। শীঘ্রই এমন দিন আসিবে যে তোমাদিগকেই সেই সাম্রাজ্যের শাসনকাষ পরিচালনার ভার গ্রহণের জন্য আহবান করা যাইবে—যে সাম্রাজ্যে সন্য কখন অস্ত যায় না এবং যাহার রাট্রিক বলিয়া আমরা গৌরবান্বিত। অদর ভবিষ্যতে তোমরাই ২৫ কোটী মানবের ভাগ্যবিধাতা হইবে। আমরা আশা করি যে তোমরা যখন রাজ্যশাসনের ক্ষমতা পাইবে, তখন বতমান অ-ব্রিটিশ নীতির অবসান হইবে এবং ভারতে এখনকার চেয়ে উজ্জবল ও সখময় যাগের উদয় হইবে।” আমি জন ব্রাইটের নিকট বহির একখন্ড পাঠাইলাম। ঐ সঙ্গে একটী পত্রে ভারতের সঙ্গে ব্রহাদেশভুক্তি এবং তাহার ফলে ভারতবাসীদের উপর লবণশলক বাবদ ট্যাক্সবধির অন্যায় নীতির প্রতি তাঁহার দস্টি আকষণ করিলাম। ব্রাইট সন্দের একখানি পত্রে আমাকে প্রত্যুত্তর দিলেন। উহার সঙ্গে পথক একখানি কাগজে লেখা ছিল—“এই পত্র আপনি যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করিতে পারেন।” আমি তৎক্ষণাৎ টাইমস ও অন্যান্য সংবাদপত্রে জন ব্রাইটের পত্রের নকল পাঠাইয়া দিলাম। একদিন সকালে উঠিয়া দেখি যে, আমি কতকটা বিখ্যাত লোক হইয়া পড়িয়াছি। খবরের কাগজের বড় বড় পোস্টারে বাহির হইল— “ভারতীয় ছাত্রের নিকট জুন ব্রাইটের পত্র”। রয়টারও ঐ পত্রের নিম্নলিখিত সারমম ভারতে তার করিয়া পাঠাইলেন। “আমি আপনারই মত লৰ্ড ডাফরিনের বমর্ণনীতির জন্য দুঃখিত এবং তাহার তাঁর নিন্দা করি। পরাতন পাপ ও অপরাধের নীতির ইহা পনরাবত্তি—যে নীতি চিরদিনের জন্য পরিত্যক্ত হইয়াছে বলিয়া আমরা মনে করিয়াছিলাম। ভারতে আমাদের প্রকৃত সবার্থ কি, তৎসম্বন্ধে এখানকার জনসাধারণের মধ্যে গভীর অজ্ঞতা—সঙ্গে সঙ্গে ঘোর বাথপরতাও রহিয়াছে। সন্নীতি এবং প্রকৃত রাজনীতিজ্ঞতা হইতে ভ্রষ্ট হইলে আমাদের বিপদ ও ধবংস অনিবাষ এবং আমাদের বংশধরগণের তাহার জন্য আক্ষেপ করিতে হইবে।” অন্ধশতাব্দী পাবে লিখিত আমার Essay on India পত্সিতকা হইতে কয়েকছর এখানে উথত করিলে অপ্রাসঙ্গিক হইবে না। ঐ প্রবন্ধ ১৮৮৬ সালে মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়। আমার মনে হয়, পরবতীকালে আমার রচনাশক্তির অধোগতি হইয়াছে। ৫০ বৎসর পল আমার রচনারীতি বেরপে স্বচ্ছন্দ ও সাবলীল ছিল, এখন আর সেরাপ নাই। সম্ভবতঃ রাসায়নিক গবেষণার নিমগ্ন থাকিবার জন্যই এইরুপ ঘটিয়াছে। (Essay on India (ভারত বিষয়ক প্রবন্ধ) হইতে উদ্ধত) "ইংলণ্ড ভারতের সামাজিক উন্নতির জন্য বাহা করিয়াছে তাহা ইঙ্গ-ভারতীয় একটি গৌরবময় অধ্যায়। রাশিয়া মধ্যে মধ্যে তাহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বার * করিয়া দেয়, কিন্তু ইংলণ্ড অন্ধ-শতাব্দীরও অধিক কাল ধরিয়া সরকারী কলেজ