পাতা:আত্মচরিত (প্রফুল্লচন্দ্র রায়).djvu/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এখানে একটী ঘটনা বিশেষরাপে উল্লেখযোগ্য; আকস্মিক ঘটনাও অনেক সময়ে কিরাপে বিজ্ঞানের উন্নতিতে সহায়তা করে, ইহার বারা তাহাই প্রমাণিত হয়। কিন্তু যাহাদের মন পব হইতে প্রস্তুত থাকে, তাহারাই কেবল এইরুপ আকস্মিক ঘটনার সযোগ গ্রহণ করিতে পারে। হোপ প্রাইজ স্কলার হিসাবে আমাকে লেবরেটরীতে অধ্যাপককে সাহায্য করিতে হইত, ইহাকে বিশেষ সুবিধারাপে গণ্য করা যাইতে পারে, কেননা ইহার সঙ্গে সঙ্গে অধ্যাপনার কাজও শেখা যায়। হিউ মারশাল জনিয়র ছাত্র ছিলেন এবং আমি তাঁহাকে অনেক সময়ে গবেষণা বিষয়ে উপদেশ ও পরামর্শ দিতাম। একবার আমি তাঁহাকে কতকগলি লবণের নমনা দিই, উদ্দেশ্য তাঁহার বিশ্লেষণ শক্তি পরীক্ষা করা এবং নিজের পরীক্ষিত বিষয়েও নিঃসন্দেহ হওয়া। লবণগুলি আমি ডক্টরের থেসিসের জন্য তৈরী করিয়াছিলাম। একটাঁর মধ্যে ডবল সালফেট অব কোবালট, কপার ও পোটাসিয়ম ছিল। ম্যারশাল ইলেকট্রোলিটিক্যাল প্রণালী অবলম্বনে বিশ্লেষণ করেন। তিনি দেখিয়া অতিমাত্র বিচ্ছিমত হইলেন যে নীচে একরকম নতন দানাদার (Crystalline) পদার্থ জমিয়া গিয়াছে। বিশ্লেষণ করিয়া বঝা গেল উহা কোবান্ট অ্যালাম’। প্রতিক্লিয়ায় যে সমস্ত পদার্থ উৎপন্ন হইল, পার সালফ্যারিক অ্যাসিড তাহার অন্যতম। এইরপে একদিনেই বহুদিনের প্রত্যাশিত একটা নতন পদার্থের আবিকতারপে যবেক ম্যারশাল বিখ্যাত হইয়া পড়িলেন। তাঁহার অনেক সমসাময়িক এবং পর্বগামী তাঁহার পশ্চাতে পড়িয়া রহিলেন। ইনঅরগ্যানিক কেমিস্ট্রি বা অ-জৈব রসায়নে ডক্টর উপাধি পাওয়ার পর আমি জৈব রসায়নশাস্ত্র সবন্ধে গ্রন্থাদি পড়িতে লাগিলাম। এই বিষয়ে আমি লেবরেটরীতে গবেষণাতেও প্রবত্ত হইলাম। ১৮৮৮ সালে শীতের সেসন শেষ হওয়ার পর দেশে ফিরিবার কথা আমি ভাবিতে লাগিলাম। কিন্তু এডিনবাগ ত্যাগ করিবার পাবে হাইল্যান্ডের দশ্যাবলী দেখিবার জন্য আমার বহুদিনের বাসনা পণ করিতে সকল্প করিলাম। আমি বাষিক এক শত পাউণ্ড বত্তি পাইতাম, ইহারই মধ্যে মিতব্যয়িতার সঙ্গে আমাকে চালাইতে হইত। বাড়ী হইতে মাঝে মাঝে সামান্য কিছু টাকা পাইতাম। লম্বা গ্রীমের ছুটীর সময়ে আমি ফাথ অব ক্লাইড, রোথসে এবং ল্যামল্যাশের সলভ অথচ মনোরম সমুদ্রাবাসে বেড়াইতে বাইতাম। এই সমুদ্র উপকাল ভ্রমণে পাবতীনাথ দত্ত প্রায়ই আমার সঙ্গী হইতেন। তিনি পরে ভারতীয় জিওলজিক্যাল সাভে বিভাগে চাকুরী গ্রহণ করেন। মিতব্যয়িতার জন্য আমরা উভয়ে একত্র থাকিতাম ও আহারাদি করিতাম, এমন কি, অনেক সময় এক শয্যায় শয়ন করিতাম। ইংলন্ডের ক্লাইটন প্রভৃতি ফ্যাশনেবল সমদ্রাবাসের তুলনায় রোথসে, বিশেষতঃ ল্যামল্যাশ খুবই সলভ জায়গা এবং সেখানকার দশ্যও সন্দের ও মনোমাখকর। প্রাতভোজনের পর কিছু পড়াশনা করিয়া আমরা পকেটে স্যাণ্ডউইচ পরিয়া দীঘ ভ্রমণে বাহির হইয়া পড়িতাম। পানীয় জলের কখনই অভাব হইত না, কেননা ঐ অঞ্চলে প্রাকৃতিক প্রস্রবণ অনেক আছে। আমার বন্ধ ভূতত্ত্ব সম্বন্ধীয় গবেষণারও বহন সম্বোগ পাইতেন এবং আমাকে পবতের স্তর বিভাগ প্রভৃতি দেখাইতেন। সমস্তদিন ব্যাপী এই ভ্রমণ যেমন উপভোগ্য, তেমনি বাস্থ্যকর বোধ হইত। ইহার সঙ্গে সমদ্রনান অধিকতর আনন্দদায়ক। ৪৫ বৎসর পরে এখনও সেই সমপ্রতীরে ভ্রমণের কথা মনে পড়িলে, আমার মনে যেন যৌবনের উৎসাহ ফিরিয়া আসে। রোথসে হইতে নিকটবতী নানাস্থানে টিমারে ভ্রমণ করা যায়। এক শিলিং ব্যয় করিয়া আমি ইনভারারে (ডিউক অব আগাইলের দাগ ও আবাসভূমি) বা আয়ারশায়ারে (এইখানে কবি বানাসের মতিস্তম্ভ) যাইতে পারিতাম। b DD BBB BBBB BBBB DDBB DDDBBS DDD DDD DBBB BDD