পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



আজকের আমেরিকা
৭৩

এটাকে যদি গলি বলা হয় তবে বোধহয় দোষ হবে না। তবে একথা মনে রাখতে হবে, ভারতে ওয়ালস্‌ স্ট্রীটের মত একটিও স্ট্রীট নাই। তাজের তুলনা যেমন তাজই, ওয়ালস্‌ স্ট্রীটের তুলনাও শুধু ওয়ালস্‌ স্ট্রীটই। স্ট্রীটের দুদিকে উচ্চ প্রাসাদগুলি দাঁড়িয়ে আছে। পথে অনেক লোক চলেছে, কিন্তু কারো মুখে হাসি নাই। তারা খুবই চিন্তিত এবং বেশ অতর্কিতে পথ চলেছে। মাঝে মাঝে একের সংগে অন্যের ধাক্কাও লাগছে। কিন্তু তারা ব্যবসা চিন্তায় এতই তন্ময় হয়ে হাঁটছিল যে শিষ্টাচার সূচক “দুঃখিত” কথাটা পর্যন্ত কারো মুখ হতে বার হচ্ছিল না। আমি এপথে সম্পূর্ণ অপরিচিত ছিলাম বলেই বোধ হয় অনেকের দৃষ্টি আমার দিকে পড়ছিল। ওয়ালস্‌ স্ট্রীট দেখতে আমি একা যাইনি আমার সংগে আরও তিনজন ভদ্রলোক ছিলেন। সংগের তিনজন আমেরিকান আমার পেছন পেছন চলছিলেন। একটা কালা আদমীর পেছনে তিনজন সাদা লোক হাঁটছে তা কম কথা নয়, এতে অনেকেরই জিজ্ঞাসু চোখ আমার উপর পড়ছিল। অনেকেই আমার সংগে কথা বলতে চেয়েছিল, কিন্তু সাথীরা তাতে বাধা দিচ্ছিল। শুধু জানিয়ে দিচ্ছিল আমি নিগ্রো নই, বিদেশী। ডিভাইন্‌ ফাদার যখন পথে চলেন তখন তাঁর সংগে অনেক সাদা লোকও চলে তাই অনেকে হয়ত ভাবছিল আমি নিগ্রো ধর্ম প্রচারক।

 সংগের তিনজন আমেরিকানের পরিচয় এখনও দেইনি এবং কি করে তাদের সংগে আমার পরিচয় হল সে কথাই এখন বলছি। নিউইয়র্ক আসার কয়েকদিন পরই গরম শুরু হয়। গরমে উলের সার্ট ব্যবহার করতে কষ্ট হচ্ছিল। শুনছিলাম নিউইয়র্কএ দোকানীরা পর্যন্ত নিগ্রোদের সংগে সৎব্যবহার করে না। দোকানীরা যাতে আমার সংগে সৎব্যবহার করে এবং আমাকে নিগ্রো না ভাবে সেজন্য মাথায় পাগড়ী বেঁধে পথে