পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (চতুর্থ বর্ষ).pdf/৪৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

esiva, Yvoro বাঙ্গলার বেগম । 80s যিনি যবনিকার অন্তরালে লইয়া এই গোপনীয় দৃশ্যগুলি দেখাইয়াছেন, তিনি আমাদের বিশেষ ধন্যবাদের পাত্র । ‘বাঙ্গলার বেগমে’ মোট ছয়জন বেগমের আলেখ্য প্রদত্ত হইয়াছেলুৎফুল্লিসা, আমিনা, আলিবর্দ-বেগম, মণিবেগম, ঘসিটি ও জিন্নতুন্নিসা। অসুর্য্যাম্পাখ্যা বেগমদিগের সম্বন্ধে বিশেষ কিছু জানিবার সুবিধা নাই। মুসলমানগণ স্বভাবতঃ ঐতিহাসিক হইলেও তঁহারা পর্দার অন্তরালস্থিতা তঁহাদের বেগমদিগের সম্বন্ধে যৎসামান্য উপাদানই আমাদের জন্য রাখিয়া দিয়াছেন। যে সামান্য উপাদান পাওয়া যায়, তাহাও এক স্থানে পাওয়া যায় না। ছত্রভঙ্গভাবে কিছু মালমসলা পাওয়া যায়-কিন্তু তাহা সংগ্রহ করা বড় কষ্টকর, প্রায় অসাধ্য। এতদ্ব্যতীত কতকগুলি ইংরাজ লেখকের গ্রন্থে বেগমদিগের সম্বন্ধে সামান্য সামান্য উল্লেখ দেখা যায়। কিন্তু শেষোক্ত উপদানে আস্থাস্থাপন করা সমীচীন নহে। যে মোগল-আন্তঃপুরে মক্ষিকার প্রবেশও সুদূরপরাহত ছিল বলিলেও অত্যুক্তি হয় না, তথাকার ব্যাপার ইংরাজরা কি করিয়া জানিবেন ? শ্রদ্রুতিপরম্পরায় তিল তালে পরিণত হইয়। “হারামের’ বহির্দেশে যাহা পৌছাইয়াছিল, তাহাই তাহারা সংগ্রহ করিয়াছিলেন- অনেক সময়ে ইচ্ছানুরূপ পরিবত্তিত করিয়াছেন। সুতরাং বেগমসম্বন্ধীয় বৃত্তান্তসংগ্রহকে আমরা প্রায় অসাধ্য বলিয়াছি। এ ক্ষেত্রে যিনি এই সকল “রাই কুড়াইয়া বেল’ করিয়াছেন, তাহার অনুসন্ধিৎসা সর্বপ্রকারে প্রশংসহঁ । লুৎফুন্নিসা হতভাগ্য সিরাজের পত্নী। পলাসীক্ষেত্রে পরাজিত হইয়া যখন মুর্শিদাবাদে প্রত্যাগমন করিয়া আশা-ভরসাহীন সিরাজ একাকী পলায়নের উদ্যোগ করিতেছিলেন, যখন তঁাহার সুদিনের সকল বন্ধু তঁহাকে পরিত্যাগ করিয়াছিলেন, তখনই তঁহার প্রিয়তমা পত্নী তাহার সঙ্গিনী হইয়া প্রাসাদ পরিত্যাগ করিয়াছিলেন। ‘বাঙ্গলার বেগমে’ যতগুলি চিত্র প্রদত্ত হইয়াছে, তন্মধ্যে লুৎফুন্নিসার চিত্রই আমাদের সর্বাপেক্ষা অধিক গ্রীতিকর বলিয়া বোধ হয়। ‘মন্থরগতি কালনাদিনী ভাগীরথীর পশ্চিম তীরবত্তী কুসুমিত-তরুলতা-সমাকীর্ণ ছায়াসিন্ধ শোক মৌন খোসবাগে স্বামীর সমাধিবক্ষে লুষ্ঠিত হইয়া” অশ্রবিসর্জনের চিত্র প্রকৃতই মনোহর। গ্রন্থকার লুৎফুন্নিসার চিত্রাঙ্কণে অভিনব কৃতিত্ব দেখাইয়াছেন। আমিনা ও ঘসিটি সহোদরা-উভয়েই নবাব আলিবর্দীর কন্যা। br