পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (চতুর্থ বর্ষ).pdf/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

थांवों, ५७२० । 夺叶11 ২১৩ । গৃহিণী অৰ্দ্ধাশনে বা অনশনে দিন যাপন করিতেন। এ সম্বন্ধে কাহারও প্রতিবাদ করিবার সম্ভাবনা বা উপায়ও ছিল না । বাল্যকালে নরেশ নাকি বিলক্ষণ কোপনস্বভাব ছিলেন ; বৃদ্ধিবয়সের সন্তান এবং সর্ব্ব কনিষ্ঠ বলিয়া পিতামাতারও আদরের দুলাল ছিলেন। বিলাসিত তঁহার যে ছিল না ; এ কথা বলাই বাহুল্য। র্তাহার শতছিদ্রযুক্ত জামার প্রতি লক্ষ্য করিয়া যদি কোন আফিসের বন্ধু বলিতেন, “আর কেন নরেশ বাবু, এটাকে পেন্সন দিন, ওটা ভাল দেখায় না। সেলাই । করিবার আর জায়গাও ত নাই!” চিরসপ্রতিভ নরেশচন্দ্র গষ্ঠীর ভাবে% বলিতেন, “পয়সার মাল, মশায় ; ফেলে দিলে কি চলে? চৌদ্দ আনা দাম দিয়ে চেতলার হাট হইতে ছ' বৎসর আগে কিনেছিলুম। এখনও অন্ততঃ আর ছ’মাস চালাতে হবে ।” আবগারী বিভাগের কোন পদার্থের সহিতই নরেশচন্দ্রের এতটুকু পরিচয় ছিল না । এমন কি তাম্বুলরাগের সহিতও কোন দিন। তঁহার ‘দন্তরুিচিকৌমদীর' মিলন ঘটে নাই। কিন্তু তিনি তাহার গৃহে উহার প্রবেশের পথ একেবারে রুদ্ধ করিতে পারেন নাই ; পত্নীর জন্য সপ্তাহে দুই পয়সার পানের বরাদ করিয়া দিয়াছিলেন । এ পয়সাটা অনর্থক ব্যয় হইলেও নরেশচন্দ্র বাধ্য হইয়া সে ক্ষতিটুকু সহা করিয়া আসিতেছিলেন। গৃহিণীর এয়োতি বজায় রাখিবার জন্য তিনি এক দিন অন্তর এক পয়সার, চিংড়িমাছ কিনিতেন। বিশ্বনিন্দুকরা এ কথাও রটনা করিত ! তবে নরেশচন্দ্র যে নিরামিষাশী সে কথা সত্য । তঁহার কোনওরূপ ব্যসনই ছিল না । তিনি যৎসামান্য আহার্য্যেই পরিতুষ্ট হইলেন ; তবে পচা কিংবা বাসি জিনিস কখনও স্পর্শ করিতেন না । বাজারের ঘূত বিশুদ্ধ নহে বলিয়া তিনি টাকায় চারি সের দরে প্রত্যহ এক সেরা দুগ্ধ কিনিতেন। সেই দুগ্ধ জ্বাল দিয়া রাখিলে যে সর পড়িত তাহাই ক্রমশঃ সঞ্চিত হইত। এইরূপে সেই সার জ্বাল দিয়া ঘূত প্রস্তুত হইত ; নরেশচন্দ্র তাহাই ব্যবহার করিতেন। স্বাস্থ্যরক্ষার প্রতি তিনি এতদূর অবহিত ; কিন্তু নষ্টমতি নিন্দুকদিগের তাহ সহ্য হইত না, তাহারা ইহার বিকৃত ব্যাখ্যা করিয়া বলিত, পাছে অসুখ হইলে ডাক্তার ডাকিতে হয়, ঔষধ পথ্যাদির ব্যয়বাহুল্য ঘটে, সেই আশঙ্কায় নরেশচন্দ্র এতটা। সতর্ক। এ সব অগ্রীতিকর মন্তব্য অবশ্যই তঁহার কাণে যাইত; কিন্তু সুবুদ্ধি নৱেশ নীচঞ্জনের ঈদৃশ উচ্চভাষী’ হাসিয়া উড়াইয়া দিতেন।