পাতা:অশনি সংকেত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 অশনি-সংকেত অনঙ্গ-বেী বললে-তুমি গাঁ বন্ধ করতে পারবে তো ? এতগলো লোকের প্রাণ নিয়ে খেলা গঙ্গাচরণ হেসে বললে-আমি পাঠশালায় ছেলেদের স্বাস্থ্য প্রবেশিকা’ বই পড়াই। তাতে লেখা আছে মহামারীর সময় কি কি করা উচিত। অন্যচিত। আসলে তাতেই গাঁ বন্ধ হবে। মন্ত্র, পড়ে গাঁ বন্ধ করতে হবে না। M বাইরে এসে বললে-ফদ লিখে নাও-আলোচাল দশ সের, পাকা কলা দশ ছড়া, গাওয়া ঘি আড়াই সের, সন্দেশ আড়াই সোর-কাপড় চাই তিনখানা শাড়ী, কস্তাপেড়ে, তিন ভেরবীর, আর প্রমাণ ধতিচাদর ভৈরবের-মারও ধরো-হােমের তামকুন্ডু । ८ळदी कृष्णी' क्ष प्रल ८१ळ । কামদেবপাের গ্রামে যেদিন গঙ্গাচরণ যায়, সেদিনই সেখানে একজন বললে--পশ্চিডত মশাই, চাল বন্ড আক্রা হবে, কিচ্ছ, চাল এ সময়ে কিনে রাখলে ভাল হয় । -কত আক্রা হবে ? --তা ধরন মণে দ্য টাকা চড়া আশচয্যি নয় । কথাটা উপস্থিত কেউই বিশ্ববাস করলে না । শাস্তিস্বস্ত্যয়ন এবং গাঁ বন্ধ করার প্রক্রিয়া দেখবার জন্য আশপাশ থেকে অনেক লোক জড়ো হয়েছিল । গ্রামের চাষীরা বললে-মণে দ্য টাকা ! তা'হলি। আর ভাবনা ছেল না। কে বলেচে। এ সব কথা ? আগেকার বন্ত নিতান্ত বাজে লোক নয়-ধান চালের চালানি কাজ করেচে, এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা আছে বলে মনে হয়। সে জোর গলায় বললে-তোমরা কিছ, বোঝো না হে-- আমার মনে হচ্চে গতিক দেখে, চালের দর ঠিক বাড়বে । আমি এ কারবার অনেকদিন ধরে করে আসচি, আমি বর্ব্বতে পারি। কথাটা কেউ গায়ে মাখলে না । তখন গাঁ বন্ধ করার ব্যাপার নিয়ে সকলে গঙ্গাচরণকে সাহায্য করতে ব্যস্ত। হােম শেষ ক’রে পড়জো আরম্ভ করতে গঙ্গাচরণ পয়ো তিনটি ঘণ্টা কাটিয়ে দিলে । এসব আজ পাড়াগাঁ, এখানকার হাল-চাল ভালই জানা আছে তার ৷ পয়সা কি আমনি অমনি রোজগার হয় ? তিনটি মাটিয় কলসী সিদর দিয়ে চিত্রিত করতে হয়েচে, তালপাতার তীর বানিয়ে চারকোণে পতে পৈতের সাতো দিয়ে সেগলো পরস্পর বাঁধতে হয়েচে, গাবকাঠের পাতুল তৈরি করতে হয়েচে গ্রাম্য ছতের দিয়ে, তেল সিদর লেপে সেটাকৈ তেমাথা প্লািন্তাঃ পততে হয়েচে-হাঙ্গানা কি কম ? সে যত বিদঘাটে ফরমাস করে, গ্রামের লোকের তত শ্রদ্ধা বেড়ে যায়। তার ওপরে । ওর কানে গেল লোক বলাবলি করচে-বলি, এ কি তুই যা তা পেলি রে ? ও'র পেটে এলেম কত ? যাকে বলে পণ্ডিত। এ কি তুই বাগান গাঁর দীন ভট্টাচার্য পেয়েছিস ? গঙ্গাচরণ হেকে বললে-নিকালি সারা দ খানা আর বেত আকন্দের ডাল দটােঠিক দােপারবেলা, এখন এ সব জিনিস কোথা থেকে যোগাড় হয়, আর কেই বা আনে। সবাই মািখ চাওয়া-চাওয়ি করতে লাগলো। একজন বিনীত ভাবে বললো-আজো, এ গাঁয়ে তো কুমোর নেই, নিশ্বকালি সারা এখন কোথায় পাই ? গঙ্গাচরণ রাগের সরে বললে-"তবে থাকলো পড়ে, ফাঁকি-জকির কাজ আমায় দিয়ে হবে