পাতা:অশনি সংকেত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশনি-সংকেত এদিকে অনঙ্গ-বেয়ের মনুশকিল হয়েচ্চে, ছটে পালাতে গিয়ে ওর চুল জড়িয়ে গিয়ে শেয়াকুল কাঁটায় আর কািচ লতায় । বসন হয়ে গেছে বিস্রস্ত ৷ ঘামে ও পরিশ্রমে মািখ হয়েছে। রাঙা । লোকটা ওর দিকে যেন অগ্নিশিখার দিকে পতঙ্গের মত। ছটে আসচে-কাছে এসে যেমন খপ করে। অনঙ্গ-বৌয়ের হাত ধরতে যাবে, মতি তাকে প্রাণপণ শক্তিতে মারলে এক স্বালা। সঙ্গে সঙ্গে-অনঙ্গ-বোঁ বলে উঠলো-খবরদার ! কাপালী-বোঁ হাউমাউ করে কে’লে উঠলো । লোকটা ধাক্কা খেয়ে মেটে আলর গতের মধ্যে পড়ে গেল । ততক্ষণ মতি এসে অনঙ্গ-বেীকে কাঁটার বাঁধন থেকে মত্ত করবার প্রাণপণে চেন্টা করচে তার তখন রণরঙ্গিণী মতি । সে চে’চিয়ে বললে-তোেল তো শাবলটা কােপালী-বৌ- মিনসের মডুটা দিই গড়ো করে ভেঙে-এত বড় আসাপদা ! অনঙ্গ-বোঁ ষাঁড়াঝোপের নিবিড়তম অংশে ঢুকে গিয়েচে ততক্ষণ, ও ভয়ে ঠক ঠক করে কপিচে । কারণ ঝোপ থেকে বেরবার পথ নেই বাইরে, সে সড়ি পথটাতে ওর আর মতির যশোধ চলছিল। লোকটা গত থেকে উঠবার চেষ্টা করচে, মতি কােপালী-বোয়ের হাত থেকে শাবলটা নিচে-এই পর্যন্ত অনঙ্গ-বেী দেখতে পেল । পালাবার পথ বন্ধ । অনঙ্গ-বে: যেখানে ঢুকেচে সেখানে মান যা আসতে হোলে তাকে হামাগাড়ি দিয়ে চার হাতে-পায়ে আসতে হবে । বিষম কচি কাঁটার লতাজাল । মাথার ওপর শাবল হাতে মতি মাচিনী রণরঙ্গিণী মতিতে দাঁড়িয়ে । লোকটা নিজের অবস্থা বঝেল । মতির হাত থেকে শাবল কেড়ে নেওয়া অত সহজ ईद का । এদিক-ওদিক চেয়ে সে সে-পথেই এক-পা দ-পা করে পিছ হঠতে লাগলো। একেবারে ঝোপের প্রান্তসীমায় পৌছে লোকটা হঠাৎ পিছন ফিরে দিলে দৌড়। মতি মাচিনী বললে-বেরিয়ে এসো গো বাম, নদিদি-পোড়ারম্যুখো মিনসে ভয় পেয়ে ছািট দিয়েচে । অনঙ্গ-বেী তখনও কপিছে, তার ভয় তখনও যায় নি । কােপালী-বেী ভয় পেলেও অনঙ্গবৌয়ের মত ভয় পায় নি বা তার অতটা ভয় পাওয়ার কারণও ঘটে নি। সে হেসে ফেললে । অনঙ্গ-বেী ধমক দিয়ে বললে-আবার হাসি আসচে কিসে পোড়ারম্যুখে ?-চুপ, ছড়ির अत्र माgथा ना মতি মাচিনী বললে-ওই বোঝে। সবাই মিলে এমন ভাবটা করলে যেন সব দোষােটা ওরাই । কােপালী-বোয়ের বয়স কম, সমস্ত ব্যাপারটা তার কাছে কৌতুকজনক মনে না হলে হাসে নি-হাসি চাপাবার চেষ্টা করতে করতে বললে-ওঃ, মতি-দিদির সে শাৰল ভঙ্গি, দেখে আমার তো-হি-ঘঁহি-হি--- অনঙ্গ-বেী ধমক দিয়ে বললে-আবার হাসে ! --নাও, নাও, বামন-দিদি আর রাগ কোরো না -হয়েচে । এখন চলে। এখান থেকে বেরিয়ে-বেলা নেই । এতক্ষণ ওদের যেন সেদিকে দহ্মিন্ট ছিল না -এখন হঠাৎ ঝোপ থেকে উইকি মেরে চেয়ে দেখলে সবাইপরের বাঁওড়ের ওপারে নোনাতলা গ্রামের বাঁশবনের আড়ালে