অশনি-সংকেত -সে মরকে গে, যাক কেরাসিন তেল। অন্ধকারে থাকবো। কিন্তু খাবো কি ? চাল নাকি মোটেই মিলবে না । দামও চড়বে। --দাম আরও চড়বে ? দশ টাকা হয়েচে, আরও ? -একজন ভালো লোক বলছিল সেদিন । এই বোলা কিছু কিনে রাখতি পারলে ভাল হোত, কিন্তু পৌনে সাত টাকা মাইনেতে রোজাকার চাল কেনাই কঠিন হয়ে পড়েচে ! আমাদের স্কুলের সেক্রেটারি হোল ও গাঁয়ের রীতিকান্ত ঘোষ। গোলাপালা আছে বাড়ীতে--- ধানচাল মজাদ আছে। সেদিন বললাম। আমায় একমণ চাল দিন, মাইনে থেকে কেটে নেবেন । তা আধমণ দিতে রাজী হয়েচে । --আপনার কত চাল লাগে রোজ ? --তা সকালবেলা। উঠলি একপালি করে চালির খরচ। খেতে দাবেলায় আট-নাটি প্রাণী । কি করে চালাই বলে তো ভায়া ? ও অধমণ চালে আমার ক'দিন ? গঙ্গাচরণ মনে মনে বললে-তার ওপর খাওয়ার যা বহর । অমন যদি সকলের হয়। বাড়ীতে, তবে রতিকান্ত ঘোষের বাবাও চাল যগিয়ে পারবে না দািগ পণ্ডিত কিছতেই ঘািমতে যায় না। মাঝে পড়ে গঙ্গাচরণেরও ঘন্ম হয় না। অতিথিকে ফেলে রেখে সে একা শহতে যায় কি করে ? তার নিজেরও যে ভয় একেবারে না। 32305 5ा क्रश । দািগ পড়িত বললে—একটা বিহিত পরামর্শ দাও তো ভয়া। ওখানে একা একা থাকি, যত সব অজ মািখদের মধ্যিখানে। আমরা কি পারি? আমরা চাই একটু সৎসঙ্গ, বিদ্যে পেটে আছে এমন লোকের সঙ্গ । নয়তো প্রাণ যে হাঁপিয়ে ওঠে। না কি বল ? -ঠিক ঠিক ! --তাই ভাবলাম। যদি পরামর্শ করতে হয় তবে ভায়ার ওখানে যাই। বাজে লোকের সঙ্গে পরামশ করে কি হবে ? তুমি যা বন্ধি দিতে পারবে, চাষাভুষো লোকের কাছ থেকে সে পরামশ পাবো না। যশোেধর খবর কি ? -জাপানীরা সিঙ্গাপাের নিয়ে নিয়েচে । -শািধ, সিঙ্গাপাের কেন ? ব্রহ্মদেশও নিয়ে নিয়েচে। জানো না সে খবর? --না-হয়ে-শনি নি তো ? ব্রহ্মদেশ ? সে তো --যেখান থেকে রেগন চাল আসে রে ভায়া । ওই যে সস্থা, মোটা মোটা আলো চাল, সিদ্ধও আছে, তবে আমি আতপ চালটাই খাই । এ আবার এক নতুন খবর বটে। কাল বিশ্ববাস মশায়ের চড়ী৷মন্ডপে বসে গল্প করবার একটা জিনিস পাওয়া গেল বটে । উঃ, এ খবরটা সে এত দিন জানে না ? কেউ তো বলেও নি। জানেই বা কে এ অজ চাষা-গাঁয়ে ? তবে গঙ্গাচরণের কাছে সবটাই ধোঁয়া ধোঁয়া । রেগন বা ব্রহ্মদেশ ঠিক কোন দিকে তা সে জানে না। পাব বা দক্ষিণ দিকে কোন জায়গায় । অনেক দীর । পরদিন দােপরেবেলাতেও দাগী পন্ডিত এখানেই আহার করলে। অনঙ্গ-বেী তার জন্য দাতিন রকমের তরকারি রান্না করলে। খেতে ভালবাসে, ব্রাহ্মণ অতিথি। তাদের চেয়ে অনেক গরীব ।
