পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাসস্তবাবু কি ভাবছেন। মনে হয় এই অনিশ্চিতের মধ্যে ঘুরে মরার থেকে তবু একটা কাজ নিলে ভালো করবেন। আমুর কথাটা বলতে গিয়েছিল, কিন্তু পটল তাকে প্রকারাস্তরে জানিয়েছে যে, আমুর ভালো চাকরী অন্যত্র কোথাও জুটবে, পটল মাস্টারমশাইকেই বিশ্বাস করতে পারে। তাই উনি যদি মত দেন, এখানে কােজ নেন। সে খুশী হবে। বসন্তবাবু ভাবছেন কথাটা, বলেছেন। পটলকে-ভেবে দেখি বাবা। গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক ছেড়ে মুনিব-ভূত্যের সম্পর্কটা গড়বো কি না একটু ভেবে দেখতে দাও। ওই কথাটা সুধাময়ীকে বলতে সে অখুশী হয়ে ওঠে-ওসব বলতে গেলে কেন ? বসন্তবাবু স্ত্রীকে দেখছেন। সুধাময়ী বলে। —ওসব আজ মিথ্যা হয়ে গেছে। কি লাভ হবে তাতে ? এদিকে দিন চলে না, ছেলেটারও চাকরী নেই। আইবুড়ো ধিঙ্গী মেয়ে ঘাড়ের উপর, এখন ওসব দেখলে চলে ? চারিদিকে ধার-দেনায় ডুবে আছি-মান-সন্মান থাকছে যে এখনও ওই সব বড় বড় কথা বলবে কাউকে ? সাবিত্রী বাবার দিকে চেয়ে থাকে। বসন্তবাবুর মুখে ফুটে উঠেছে অসহায় একটা ভাব। নিজের এতদিনের আদর্শ বিকিয়ে দিতে হবে শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য এই কথাটা ভাবতেও মন বিষিয়ে ওঠে তার আজও। বসন্তবাবুও জানেন সব কথা। জানেন এ বাড়ির মানুষগুলো আধাপেটা খেয়ে عسق ধুকছে। তবু এত সহজে নিজেকে বিকিয়ে দিতে চান নি। পটলের কাছে তার মাথা হােঁট করতে লজ্জা হয়েছে। তাই মতামতটা সােজা জানতে পারেন নি। সাবিত্রী বুঝেছে বাবার এই অবস্থার কথা। তাই বলে ওঠে সাবিত্রী। -এ সব ব্যাপারে বাবাকে জোর করে কিছু করতে বলো না মা ? বাবা যদি ভালো না বোঝেন কেন যাবেন সেখানে । —থাম তুই সাবি। সুধাময়ীর মুখে একটা কাঠিন্য ফুটে ওঠে। বসন্তবাবু মেয়ের কথায় খুশি হন। তবু সাবিত্রী তাকে ভুল বোঝে নি। কিন্তু সুধাময়ী ফোঁস করে ওঠে। আজ তার কাছে সবকিছু মিথ্যা হয়ে গেছে। তাই বলে। —সব তাতে তুই কথা বলিস না। তোর দাদা আর তোর মুরোদ বুঝেছি। এখন W SR