পাতা:কবিকঙ্কণ-চণ্ডী (প্রথম ভাগ) - চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\98by কবিকঙ্কণ-চণ্ডী চণ্ডীর কঁচুলি অবলম্বন করিয়া কবি গ্ৰাম্যতা হইতে একদম পৌরাণিকতায় আসিয়া উপস্থিত হইতেছেন । এ যেন তিমি-মাছের হাপি ছাড়ার মতন পণ্ডিত কবির বিদ্যা প্ৰকাশ করিয়া লওয়ার অবসর সৃষ্টি । নিম্নস্তরের জীবনযাত্রা যখন উচ্চ স্তরকে ভেদ করিয়াছিল, যখন অনাৰ্য্য সাধারণের দেবতা আৰ্য্য শাস্ত্রের মধ্যে ও অবৈদিক ধৰ্ম্ম ব্ৰাহ্মণ্য ধৰ্ম্মের মধ্যে জোর করিয়া প্ৰবেশ করিতেছিল, তখন উভয় পক্ষে বাফা-নিম্পত্তি করিতে করিতে শাস্ত্রীয় ংস্কৃত পুরাণ ও লৌকিক ভাষা-পুরাণ প্ৰস্তুত হইতেছিল। মঙ্গলকাব্যগুলি সেই লৌকিক ভাষা-পুরাণ ; এর মধ্যে আৰ্য্য অনাৰ্য্য ব্ৰাহ্মণ্য অব্ৰাহ্মণ্য শাস্ত্রীয় ও লৌকিক বিরুদ্ধ উপকরণ একত্র করা হইয়াছে, কিন্তু জোড়াতালি-রিকমে-যেন বাউলের আলখাল্লা । কঁচুলি নিৰ্ম্মাণের বর্ণনায় একদিকে বাস্তবিকতা ও অন্যদিকে অত্যুক্তি আছে। কিন্তু শ্রোতাদের কিছুতেই আপত্তি নাই। কঁচুলিতে বা কাপড়ে চিত্র রচনার বিবরণ প্রাচীন প্ৰায় সব কাব্যেই পাওয়া যায়। কবিকঙ্কণ-বৰ্ণিত চণ্ডীর কঁচুলিব কারুচিত্রের অনুরূপ চিত্র রূপরামের ধৰ্ম্মমঙ্গলে ( ১৫ শতক ) নয়ানীর কঁচুলিতে অঙ্কিত দেখিতে পাই। রূপরাম খুব সম্ভব কবিকঙ্কণের পূর্ববৰ্ত্তী । ( বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়, ১ম খণ্ড, ৩৮৬-৩৮৭ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য। ) মাণিক গাঙ্গুলির ধৰ্ম্মমঙ্গলে ফলা-চিত্রণের সঙ্গেও কবিকঙ্কণের চণ্ডীর কঁচুলি-চিত্ৰণ অনেক মিলে। ১৭৮ পৃষ্ঠা বিশাই-বিশ্বকৰ্ম্ম । ভারত পুরাণ-মহাভারত । f'sa নিরঞ্জন অবতার-বৌদ্ধ ত্রিরিত্বের অন্যতম ধৰ্ম্ম দেব। দেহেত জনমিল পারভুর নাম নিরঞ্জন।-শূন্য পুরাণ । ধৰ্ম্মজয় বলিয়া সকল ভক্ত ডাকুক।--জয় জয় নিরঞ্জন দেব। শ্ৰীশ্ৰীধৰ্ম্মনিরঞ্জন-ভট্টারকপূিজা কৰ্ম্ম কৰ্ত্তং সঙ্কল্লম অহং করিষ্যে। —ধৰ্ম্মপূজাবিধান। ১৭৯ পৃষ্ঠা দ্বিতীয়ে বরাহমূৰ্ত্তি ইত্যাদি-বিষ্ণুর এইসব অবতারের নাম ও পৰ্য্যায়ক্রম ও পরিচয় ভাগবত ১৩ ও ২৭ হইতে সংগৃহীত হইয়াছে।—“লোকনাথ ভগবান এই বিশ্বের উৎপত্তির নিমিত্ত দ্বিতীয় বারে বরাহ-রূপে অবতীর্ণ হইয়া, রসাতলগত পৃথিবীকে উদ্ধার করেন। দেবর্ষি নারদ, র্তাহার তৃতীয় অবতার।