পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার দীক্ষার কয়েক মাস পরেই শু্যামবাজার ব্রাহ্মসমাজের বার্ষিক উৎসব উপস্থিত হইল। তখন উক্ত সমাজের প্রতিষ্ঠাকর্তা কাশীশ্বর মিত্র মহাশয় জীবিত ছিলেন । তিনি আমার নিকট লোক পঠাইয়া অনুরোধ করিলেন যে, আমাকে উক্ত উপাসনাতে দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও অযোধ্যানাথ পাকড়াশী মহাশয়দের সহিত বেদীতে বসিতে হইবে ও উপদেশের ভার লইতে হইবে। আমি ভয়ে সঙ্কচিত হইলাম, কিন্তু তাহারা কোনো মতেই ছাড়িলেন না। অবশেষে রাজি হইলাম। কিন্তু তাহার। চলিয়া গেলে, বেদীতে বসিতে হইবে ভাবিয়া লজ্জা ও ভয়ে মন অভিভূত হইয়া পড়িল। কিন্তু কি করি, কথা দিয়াছি । তখন অনন্যেপায় হইয়া উপদেশটি লিখিতে বসিলাম । লিখিয়া এক প্রকার দাড় করাইলাম । উপাসনা স্থলে সেইটি ভয়ে-ভয়ে পাঠ করিলাম । কিন্তু বেদী হইতে নামিলেই দ্বিজেন্দ্রবাবু কোলাকুলি করিয়া আমার উপদেশের অনেক প্রশংসা করিলেন । সভাস্থলেও অনেকে সন্তোষ প্রকাশ করিতে লাগিলেন । পরদিন কলেজে বি. এ. ক্লাসে পডিতেছি, এমন সময় ভূতপূর্ব ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট ঈশ্বরচন্দ্র ঘোষালের নিকট হইতে কলেজের অধ্যাক্ষের নামে এক পত্র আসিয়া উপস্থিত, "শিবনাথ ভট্টাচার্য নামে তোমাদের বি. এ. ক্লাসে এক ছাত্র আছে, তাহাকে আমি কিছুক্ষণের জন্য চাই।” তদনীন্তন অধ্যক্ষ প্রসন্নকুমার সর্বাধিকারী মহাশয় আমাকে ডাকিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “ঈশ্বর ঘোষাল তোমাকে ডাকিয়াছেন কেন ?” আমি বলিলাম, “কিছুই জানি না, তাহার সহিত আলাপ পরিচয় নাই।” তখন তিনি আমাকে পাঠাইবার পূর্বে ঈশ্বর ঘোষাল সম্বন্ধে অনেক কথা বলিয়া দিলেন, বলিলেন, “সাধাবান, তিনি তোমাকে খ্রীষ্টীয় ধর্ম ভজাইবেন।” সৰ্বাধিকারী মহাশয় যাহা বলিয়াছিলেন, গিয়া তাহাই শুনিলাম। ঘোষাল মহাশয় পূর্বদিনে শুগামবাজারের উপাসনাতে উপস্থিত ছিলেন এবং আমার উপদেশে প্রীত হইয়াছিলেন। তিনি আমাকে খ্রীষ্টীয় ধর্মের মহৎ ভাব দেখাইবার জন্য আদিম প্রফেটদিগের ভবিষ্যদ্বাণীর সহিত পরবতী ঘটনা তুলনা করিয়া দেখাইতে লাগিলেন, এবং আমাকে একখানি বাইবেল উপহার দিলেন । আমার প্রতি পুত্রাধিক স্নেহ প্রদৰ্শন করিয়া বিদায় করিলেন । আমি ভাবিতে ভাবিতে আসিলাম, “ইনি কেন খ্রীষ্টীয় ধর্মে हैंौकिऊ श्म ना ?” শুরামবাজারের উপদেশের ধাক্কা এখানে থামিল না । কয়েকদিন পরেই সিন্দুরিয়াপটী ‘পারিবারিক সমাজ" হইতে ক্ষেত্রনাথ শেঠ নামে একজন সভ্য আসিয়া উপস্থিত । আসিয়া আমাকে বলিলেন যে, উক্ত পারিবারিক সমাজের সকলের ইচ্ছা! যে, আমি তাহদের সমাজের আচার্যের ভার গ্রহণ করি। অগ্রে অযোধ্যানাথ পাকড়াশী মহাশয় সেই সমাজের আচার্যের কার্য করিতেন, কিন্তু কার্যবাহুল্য, নিবন্ধন তিনি Ο Σύν