পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

帝汐 齋兩茄 বলিবার নয়, রাত্রে বোধ হয় সে শুধু আলোয়ানট মুড়ি- দিয়া পড়িয়া থাকে, চৌকীর বাহিরে অধোকটা এখন মাটিতে লুটাই- . তেছে। এসব তবু যেন চাহিয়া দেখা যায়, তাকানো যায় । না। শীতলের মুখের দিকে। চোখ উঠিয়া, মুখ ফুলিয়া বীভৎস দেখাইতেছে তাহাকে, হাড় কখানা ছাড়া শরীরে বোধ হয় किछू नांदे । BY DB DBSDDB DDBBDB DBD S তারপর সহসা শু্যামার কি হয় কে জানে, ফণীকে জোর করিয়া নামাইয়া দিয়া জননীর মত ব্যাকুল আবেগে শীতলকে জড়াইয়া ধরিয়া টানিয়া আনে, শিশুর মত আলগোছে শোয়াইয়া দেয় মাদুরে, বলে, এমন করে ভুগছি, আমাকে একটা খপরও তুমি प्रिव् न 6° ! পরদিন সকালে সে হারান ডাক্তারকে ডাকিয়া পঠাইল । হারানকে খবর দিলে পচিশ টাকা বাড়িভাড়া পাঠানোর ছালনাটুকু যে ঘুচিয়া যাইবে শুষ্ঠামা কি তা ভাবিয়া দেখিল না। ভাবিল বৈকি। রাত্রে কথাটা মনে মনে নাড়াচাড়া করিয়া সে দেখিয়াছে, হারানের মহৎ ছলনাকে বাচাইয়া রাখার জন্য হারানকে তার ছলনা করা উচিত নয়। সে যে এখানে আসিয়া জানিতে পারিয়াছে বাড়িতে তাহার ভাড়াটে আসে নাই, হারান। দয়া করিয়া মাসে মাসে তাকে টাকা পাঠায়-এটা হারানকে জানিতে দেওয়াই ভাল। পরে যদি হারান জানিতে পারে শ্যাম কলিকাতা আসিয়াছিল ? তখন কি হইবে ? হারান কি তখন মনে করিবে না ষে সব জানিয়াও টাকার লোভে শুষ্ঠামা চুপ করিয়া আছে ? হারান আসিলে শ্যামা তাহাকে প্ৰণাম করিল। বলিল, ভাল আছেন বাবা আপনি ? কাল সন্ধেবেলা এসে পৌঁছেচি আমি, আগে তো জানতে পারি নি। কবে খালাস পেয়ে এখানে এসে পড়ে রয়েছে, -বিপদের ওপর কি যে আমার বিপদ আসছে। বাবা, কোন দিকে কুল-কিনারা দেখতে পাইনে। সমস্ত মুখ ফুলে গিয়েছে, শরীরে দারুণ জ্বর, ডাকলে ডুকলে সাড়াও ভাল করে দেয় না। বাবা । শুষ্ঠামা চোখ মুছিতে লাগিল । হারান যেন অপরিবর্তনীয়, মাথার চুলে পাক ধরিবে দেহে বাধক্য আসিবে তবু সে কণামাত্র বদলাইবে না, বিধানের প্ৰথম অসুখের সময় দেখিতে আসিয়া যেমন নির্মমভাবে শু্যামাকে সে কাদিতে বারণ করিয়াছিল, আজও তেমনি ভাবে বারণ করিল। খামার জীবনে রহস্যময়, দুর্বোধ্য মানুষের পদাৰ্পণ আরও ঘটিয়াছে বৈকি, গোড়ায় ছিল রাখাল, তারপর আসিয়াছিল মামা তারাশঙ্কর, কিন্তু এই লোকটির সঙ্গে তাদের তুলনা হয় না, একে একে তাদের রহস্যের আবরণ খসিয়া গিয়াছে, হারান শুধু চিরকাল যবনিকার আড়ালে রহিয়া গেল। খামাকে যদি সে স্নেহ করে, মেহের পাত্রীকে দেখিয়া একবিন্দুখুলি কি তাহার হইতে নাই ? আজি হারান t ডাক্তার শুধু রোগী দেখতে আসার মত শুমার বাড়ি আসিবে, , আত্মীয় বলিয়া ধরা দিবে না ? শীতলকে হারান অনেকক্ষণ পরীক্ষা করিল। বাহিরে আসিয়া রাখাল ও শ্যামাকে বলিল, কদিন জরে ভুগছে জানিনে বাবু আমি, জিজ্ঞাসা করলে বলতে চায় না । অনেকদিন থেকে না খেয়ে শুকোচ্ছে সেটা বুঝতে পারি। তারপর লাগিয়েছে ঠাণ্ডা। সব জড়িয়ে অবস্থা যা দাড়িয়েছে সারিতে সময় নেবে,-বড় ডাক্তার ডাকতে চাও ডাকো আমি বারণ করিনে, কিন্তু ডাক্তার ফাক্তার ডাকা মিছে তাও বলে রাখছি,-ওর সব চেয়ে দরকার বেশি সেবাযত্নের । বড় ডাক্তার ? হারানের চেয়ে বড় ডাক্তার কে আছে শুষ্ঠামা তো জানে না ! শুনিয়া হারান খুসি হয়। বলে, দাও দিকি কাগজ কলম, ওষুদ লিখি। আর মন দিয়ে শোনো যা যা বলে যাই, এতটুকু এদিক ওদিক হলে চলবে না,- টুকেই নাও না কথাগুলো আমার ? মনে যা থাকবে আমার জানা আছে। একে একে হারান বলিয়া যায়,-ওষুদ, পথ্য, সেবার নিদেশ। ঘড়ির কঁাটা ধরিয়া সময় বাধিয়া দেয়। বারবার সাবধান করে, এতটুকু এদিক ওদিক নয়, আটটায় যে ওষুদ দেওয়ার কথা দিতে যেন আটটা বাজিয়া পাঁচ মিনিটও না হয়, যখন দু'চামচ ফুড দেওয়ার কথা তিন চামচ যেন তখন न्7| *(? । শ্যামা ভয়ে ভয়ে ধলে, কোন ব্যবস্থাই তো নেই। এখানে, খালি বাড়িতে এসে উঠেছি আমরা, বনগা কি নিয়ে যাওয়া যাবে না ? হারান যেন আনমনেই বলে, বনগাঁ ? তা চল, বনগাতেই নিয়ে যাই-একটা দিন আমার নষ্ট হবে, হলে আর উপায় কি ? জর করে, না খেয়ে, ঠাণ্ডা লাগিয়ে কি কাণ্ডই বাধিয়ে রেখেছে। হতভাগা । ক’টায় গাড়ি ? দেড়টায় ? তবে সময় আছে ঢের, যাও দিকি তুমি রাখাল ওষুদপত্রগুলি নিয়ে এসো কিনে, আমি রোগী দেখে আসছি। ঘুরে এগারোটার মধ্যে - দু'টো পান আমায় দিতে পার ছেচে ? দোক্ত থাকে তো দিও খানিকটা । হারান বুড়া হইয়া গিয়াছে, পান চিবাইতে পারে না, ছেচা পান খায়। কিন্তু হাৰ্মান বদলায় নাই। বুড়া হইতে হইতে সে মরিয়া যাইবে, তবু বোধ হয় বদলাইবে না। শ্যামা কি জানে না। আত্মীয়তা করিয়া শীতলকে সে বনগা পৌছাইয়া দিতে যাইতেছে না, যাইতেছে ডাক্তার হইয়া রোগীর সঙ্গে ? শ্যামার বলার অপেক্ষা রাখে নাই। তা সে কোন দিনই রাখে না। সেই প্ৰথমবার বিধানের অসুখের সময় জরতপ্ত শিশুটিকে সে যে গামলার ঠাণ্ড জলে ডুবাইয়াছিল সেদিনও সে শুমার বলার অপেক্ষা রাখে নাই। যা করা উচিত হারান। তাই করে। হারানের স্নেহ নাই, আত্মীয়তা নাই, কোমলতা নাই, কতবার ভুল করিয়া শু্যামা ভাবিয়াছে হারান