পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

商可前 VO) বকুল বলিল, তোমার পায়েস আমরা খাইনে । শ্যামা বলিল, দেখে, ভাল করছ না। কিন্তু তুমি। আদর দিয়ে দিয়ে মেয়ের তো মাথা খেলে । এর জবাবে শীতল বা বকুল কেহই কিছু বলিল না। পা দিয়া পায়সের বাটি উঠানে ছুড়িয়া দিয়া শুঠাম ফেলিল কঁঠিয়া । রাত প্ৰায় ন’টার সময় দু’জনে ফিরিয়া আসিল। বকুলের গায়ে নতুন জামা, পরণে নতুন কাপড়, দু-হাত বোঝাই খেলনা, আনন্দে বকুল প্ৰায় পাগল। আজ কিছুক্ষণের জন্য সকলের সঙ্গেই সে ভাব করিল, শ্যামার অপরাধও মনে রাখিল না, মহোৎসাহে সকলকে সে তাতার সম্পত্তি দেখাইল, বাবার সঙ্গে কোথায় কোথায় গিয়াছিল, গল গল করিয়া दक्रिश्l cक्रॉब्ल ! শীতল উৎসাহ দিয়া বলিল, কি খেয়েছিস বললি না বুকু ? পরদিন রাত্রে প্রেস হইতে ফিরিয়া বকুলকে শীতল দেখিতে পাইল না। শুষ্ঠামা বলিল, মামার সঙ্গে সে বনগাঁয়ে পিসির কাছে বেড়াইতে গিয়াছে। আমায় না বলে পাঠালে কেন ? বললে কি আর তুমি যেতে দিতে ? যাবার জন্য কঁদোকাটা করতে লাগল, তাই পাঠিয়ে দিলাম। হঠাৎ বনগা যাবার জন্য ও কাদাকাটা কবল কেন ? কাল পৰ্ব্বস্তু ফিরে আসবে । বোকের মাথায় কাজটা করিয়া ফেলিয়া শ্যামার বড় ভয় আর অনুতাপ হইতেছিল, সে আবার বলিল, পাঠিয়ে অন্যায় কবেছি। আব্ব করব না । শীতলের কাছে ক্ৰটি স্বীকার করিতে আজকাল শ্যামার এমন বাধ বাধ ঠেকে । নিজে চারিদিকে সব ব্যবস্থা করিয়া করিয়া স্বভাবটা কেমন বিগড়াইয়া গিয়াছে, কোন বিষয়ে কারে কাছে যেন আর নত হওয়া যায় না । আর বকুলকে এমন ভাবে হঠাৎ বনগায়ে পঠাইয়াও দিয়াছে তো এই কারণে, মেয়ের উপব অধিকার জাহির করিতে । কাজটা যে বাড়াবাড়ি হইয়া গিয়াছে, ওরা রওনা হইয়া যাওয়ার পরেই শ্যামার তাহা খেয়াল হইয়াছে। শীতল কিন্তু আজ চেচামেচি গলাগলি করিল না, করিলে ভাল হইত, ছড়ি দিয়া শ্যামাকে অমান করিয়া হয়ত সে তাহা হইলে মারিত না। মাথায় ছিটওলা মানুষ, যখন যা করে একেবারে চরম করিয়া ছাড়ে। শ্যামার গায়ে ছড়ির দাগ কাটিয়া কাটিয়া বসিয়া গেল । মারিয়া শীতল বলিল, বজ্জাত মাগী, তোকে আমি শান্তি দিই দেখা । এই গেল এক নম্বর। দু' নম্বর শান্তি তুই জন্মে ভুলবি না। শাস্তি ? আবার কি শাস্তি শীতল তাহাকে দিবে ? তাহার স্বামী ? বিবাহের পরেই শুষ্ঠামা টের পাইয়াহিল শীতলের মাথায় ছিট আছে। পাগলের কাণ্ডকারখানা কিছু বুঝিবার উপায় নাই। পরদিন দশটার সময় নিয়মিতভাবে স্নানাহার শেষ করিয়া শীতল আপিসে গেল। বারটা একটার সময় ফিরিয়া আসিল । শ্যামাকে আড়ালে ডাকিয়া তাহার হাতে দিল একতাড়া নোট। শ্যামা গুণিয়া দেখিল, এক হাজার টাকা । এ কেমন শাস্তি ? শীতল কি করিয়াছে, কি করিতে চায় ? এ কিসের টাকা ?-শ্যামা রুদ্ধশ্বাসে জিজ্ঞাসা করিল। শীতল বলিল, বাবু বোনাস দিয়েছেন। পরশু লাভের হিসাব হ'ল। কিনা, ঢের টাকা লাভ হয়েছে এবছর,-আমার জন্যেই তো সব ? তাই আমাকে এটা বোনাস দিয়েছেন। এত টাকা । হাজার। আনন্দে শ্যামার নাচিতে ইচ্ছা! হইতেছিল। সে বলিল, বাবু তো লোক বড় ভাল ?-- হঁ্যাগ, কাল বডড রেগেছিলে না ? বড় মেরেছিলে বাবু কাল-পাষণের মত। ভাগ্যে কেউ টের পায়নি, নইলে কি ভাবত ?-আপিস যাবে নাকি আবার ? याई, कांच १icज़ आएछ । जांदक्षicन carशi ऐांक। এই বলিয়া সেই যে শীতল গেল, আর আসিল না। দুদিন পরে মামা বনগা হইতে এক ফিরিয়া আসিল। বুকু কই মামা ?-শ্যামা জিজ্ঞাসা করিল। মামা বলিল, কেন, শীতলের সঙ্গে আসেনি ? শীতল যে তাকে নিয়ে এল ?

  • তখন সমস্ত বঝিতে পারিয়া শ্যামা কপাল চাপড়াইয়া বলিল, আমার সর্বনাশ হয়েছে মামা ।

কে জানিত, পয়ত্ৰিশ বছর বয়সে চারটি সন্তানের জননী শ্যামাব জীবনে এমন নাটকীয় ব্যাপার ঘটবে ?

  1. ffb;

বকুলকে সঙ্গে করিয়া শীতল চলিয়া গিয়াছে। ফিরিয়া যদি সে না আসে, এ শাস্তি শ্যামা সত্যই জীবনে কখনো ভুলিবে না। মামা বলিল, অত ভাবছিস কেন বল দিকি শু্যাম, রাগের মাথায় গেছে, রাগ পডালে ফিরে আসবে। সংসারী মানুষ চাকরি-বাকরি ছেড়ে যাবে কোথা ? আর ও মেয়ে সামলানো কি তার কম্মো ? দু'দিনে হয়রাণ হয়ে ফিরতে পথ পাবে না। শ্যামা বলিল, কি কাণ্ড সে করে গেছে মামা, সেই জানে । কাল অসময়ে আপিস থেকে ফিরে আমায় হাজার টাকার নোট দিয়ে গেল। বললে, আপিস থেকে বোনাস দিয়েছে। কাল তো বুঝতে পারিনি মামা, হঠাৎ অত টাকা বোনাস দিতে যাবে কোন-লাভের যা কমিশন পাবার সে তো ও পায় ? শু্যামার কিছু ভাল লাগে না, বুকের মধ্যে কি রকম করিতে থাকে, কিসে যেন চাপিয়া ধরিয়াছে বুকটা। কাজ করিয়া করিয়া এমন অভ্যাস হইয়া গিয়াছে যে অন্য মনে