পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

dy" দেখেছি থিয়েটার। থিয়েটার টু-শিশির ভাদুড়ীর সীতা CE (WColfo l' কাহিনী শুনিয়া সুমতি অনেকক্ষণ নীরব হইয়া ছিল। শেষে আস্তে আন্তে একটা অতি ছেলেমানুৰী প্রশ্ন করিয়াছিল, ‘সীতাকে আপনি খুব ভাল বাসেন, না ?” নন্দ সহজ ভাবেই ইহার জবাব দিয়াছিল। ‘বাসি। কিন্তু একটি মাত্ৰ বোনের অমন অবস্থা হলে কোন ভাই তা সইতে পারে না। সিঁথির লাল ঘায়ের যন্ত্রণায় সীতার ছটফটানি তুমি যদি দেখতে সুমতি । সিধীতে লাল ঘা ! কি বৰ্ণনা ! সুমতি আর কথা কহিতে পারে নাই। অথচ তাহার অনেক বক্তব্যই ছিল। স্বামী বৃদ্ধ হোক মাতাল হোক হিন্দু মেয়ের স্বামীর ঘর না করিয়া কেমন করিয়া চলে নন্দকে একথাটা সে জিজ্ঞাসা করিবে ভাবিয়ছিল। বৃদ্ধ মাতাল স্বামীও যে স্ত্রীকে যথেষ্ট ভালবাসিতে পারে, অন্তত বিবাহের পর কয়েকটা বছর ; ) মাতাল স্বামীর ছেলেমেয়ে নিয়াও যে একটা নারী-জীবন এক দিক দিয়া সার্থক হইতে পারে এই ধরণের কয়েকটা কথা আভাষে ইঙ্গিতে নন্দকে জানাইয়া দিবে। কিনা মনে ; মনে সুমতি নাড়া চাড়া করিয়া দেখিতেছিল । কিন্তু সীতার সিন্ধীর বর্ণনা শুনিয়া কিছু বলিতে তাহাকে ভরসা হয় নাই। নিজের সিথী তাহার বড় বেশী সাদা হইয়া গিয়াছে। পরদিন সকালেই সুমতি খাবার নিয়া আসে । নন্দ সঙ্গে সঙ্গে অতন্দ্র রকমের খুসী হইয়া উঠে। হাসিয়া বলে “আঃ, খাবারে আজ ক্ষমার অমৃত । দোকানে গিয়া খানিকটা সায়ানাইড খেয়ে দেখিব মারি কিনা।” "খাবেন না, মরবেন । এ ক্ষম নয়। দয়া ।” নন্দর মুখ ঘনাইয়া আসে-'দয়া ?” “তবে কি ভাবেন আপনি ?” দু'জনের উদ্ধত দৃষ্টি নীরবে খানিকক্ষণ কলহ করে। সহসা বাটিটা তুলিয়া নিয়া নন্দ মেঝের উপর আছড়াইয়া ক্যালে। আঙ্গুল বাড়াইয়' খোলা দরজাটা দেখাইয়া চাপা। গলায় বলে “যাও । দয়াবতী দয়া করে যাও।” ক্ষমা চায় দুপুরে খাইতে আসিয়া। অন্য দিনের চেয়ে একটু সকাল করিয়াই আসে। হাত জোড় করিয়াই হাসিয়া ফ্যালে। বলে, “ক্ষমা সুমতি।” ইহাতে নন্দকে ক্ষমা করিবার সুবিধাই হয়। কারণ সুমতির মুখের দিকে চাহিয়া সে আর হাসিতে পারে না ! তাহার চোখ দুটি ছল ছল করিতে থাকে । * ৰলে। ‘এবারকার মত ক্ষমা করে ফেলে সুমতি, সত্যি বলছি আর কোন দিন তোমাকে ঠাট্টা করব না।” ঠাট্ট ! সুমতি গম্ভীর মুখে বলে “আচ্ছ।” 'ना।' মানিক-গ্ৰন্থাবলী অপরাধে সুমতির কাছে হাত জোড় করিয়া ক্ষমা চাহিতে হইয়াছিল, বাকী দিনটুকুর মধ্যেই সে কিন্তু তাহা সম্পূর্ণ বিস্মৃতি श्में । রাত্রে সে যখন ফেরে অক্ষয় হয়ত খাইতে বসিয়াছে, অদূরে বসিয়া সুমতি তাহার আহারের তত্ত্বাবধান করিতেছে ; খাইতে বসিয়া অক্ষয় কথা বলেন, কখন কি প্রয়োজন খেয়াল রাখিয়া চাহিয়া নিতে পারে না, সুতরাং তাহার খাওয়ার উপর সুমতিকে তীক্ষু নজর রাখিতে হয়। উকি দিয়া দেখিয়া নন্দ নিজের ঘরে চলিয়া যায়। আহারান্তে অ্যাচাইয়া অক্ষয় উপরে চলিয়া না গেলে সে খাইতে আসে না। আসনে বসিয়া বলে ‘ওর সঙ্গে কেন খেতে বসি না জান ?” নন্দর ছলো ছলো চোখদুটির কথা সুমতির মনে ছিল, সে সদয়ভাবে হাসিয়া বলে ‘জানি বৈকি। যতই হোক উনি মনিব তো । “ও: ভারি মনিব । আর তিনটা বছর পড়লে আমি ওর চেয়ে বড় ডাক্তার হ’তম এ্যাদিনে, তা জান ? বলতে *icक्ष न।' সুমতি একটু ভাবিবার ভাণ করিয়া বলে “তবে ওকে দেখতে পারে না বলে বোধ হয় ।” নন্দ ভাবিয়া বলে "তাও নয় । झाष् िश्च्च ना बCव्ल । “ভাগের পূজা ! পূজা । সুমতির যেন চমক ভাঙ্গে। এবং দেখিতে দেখিতে সমস্ত মুখ তাহার রাগে। লাল হইয়া উঠে। এমনিভাবে দিন কাটে । মনের জোরে যে দূরত্ব সুমতি বজায় রাখিতে পারে না, বিষাদ ও বেদনার মধ্যে ক্ৰমে ক্রমে তাহার সৃষ্টি হয়। নিজের দুর্বলতার অপরাধটা ধীরে ধীরে নন্দর ঘাড়ে চাপাইয়া দিয়া তাহার উপর একটু বিতৃষ্ণও সে বোধ করে । নন্দর পরিহাসে আর সে রাগ করেন, নীরবে উপেক্ষা করিয়া যায়, পরিহাসম্পূহও নন্দর সুতরাং আপন হইতেই কমিয়া আসে। “জেনে শুনে যত দোষ করেছি। সব তুমি ক্ষমা করেছ সুমতি । না জেনে এমন কি দোষ করলাম সুমতি কিছুমাত্র মমতা বোধ করে না। ইহাকে আবার ভাবি জমাইবার হীন প্ৰচেষ্টা মনে করিয়া তাহার গা জ্বলিয়া যায়, রুক্ষ সুরে সে বলে “আপনার কোন অসুবিধা হচ্ছে কি ?” নন্দর মন সরল, সে তথাপি হাল্কা সুরে বলে “আমার শত্রুর অসুবিধা হচ্ছে। তবে খাওয়ার সময় তুমি উপস্থিত থাক না বলে অসুবিধাই বল দুঃখই বল একটু হচ্ছে।” 'यांगांद्म। गमद्म श्म ना ।' শেষ পৰ্য্যন্ত নন্দ রাগিয়া উঠে, ৰিশ্ৰী কথা বলে : “ভালই, ভালই। আমি শুধু কম্পাউণ্ডার যে ” ইহার একটা কড়া জবাব নন্দ প্ৰত্যাশা করে। কিন্তু সুমতি নীরবে আপনার কাজ করিয়া যায়, সে রাগ করিয়াছে ভাগের পুজায় আমার খুলী হুইয়া শিস দিতে দিতে নন্দ চলিয়া যায়। কি কিনা তাহা পৰ্য্যন্ত নন্দ অনুমতি করিতে পারে না।