পাতা:হলুদ পোড়া - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হলুদ পোড়া করিয়াছে কিন্তু কোনবারই এত স্পষ্ট ও প্রবলভাবে নয়। জিজ্ঞাসা করিতে প্রমথ ব্যাপারটা হাসিয়া উড়াইয়া দিয়াছে, মাথা নাড়িয়া বলিয়াছে, ও কিছু না । আজ প্রমথ শান্ত হইলে কারণ জানিবার জন্য হাসি পীড়াপীড়ি করিতে লাগিল। প্রমথ বলিল, হঠাৎ মাথাটা কেমন ঘুরে উঠল । মাথা ঘুরে উঠল বলে তেলের গন্ধ শুকবে কেন ? তেলের গন্ধ শুকলে আমার মাথাঘোরা সেরে যায় । কি বলছ পাগলের মত ? তাই কখনো হয় ? কি হয়েছে তুমি बलथ ना आगांध । &ওই তো বললাম । আবোল-তাবোেল কতগুলি কৈফিয়তে তখনকার মত হাসিকে শান্ত করা যায় বটে। কিন্তু তার কৌতুহলের নিবৃত্তি হয় না। পরদিন সে আবার একথা তোলে । তারও পরের দিন । একবার প্রমথের মনে হয় সুনীতির কথা সব সে শোনাইয়া দেয়। কিন্তু এতকাল পরেও সুনীতির মাথার চুলের কাল্পনিকঁ ভ্ৰাণ নাকে লাগিয়া সে অতদূর অনুস্থ হইয়া পড়ে একথা জানিলে হাসি ব্যাপারটা ঠিক কিভাবে গ্ৰহণ করিবে: বুঝিতে না পারিয়া তাকে সব কথা জানাইতে তার সাহস হয় না। কে জানে হাসি বিশ্বাস করিবে কি না যে আজকাল সুনীতির প্রতি আকস্মিক ক্ৰোধ ও ঘূণার সঞ্চার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আগের চেয়েও জোরালো ৭৯ ভাবে সে ওমিলনাইনের গন্ধ পায়, আগের চেয়েও বেশী বিচলিত হইয়া পড়ে। হয়ত ধীরে ধীরে হাসির সঙ্গে তার যে গভীর অন্তরঙ্গতা জন্মিতেছে। এসময় হাসিকে সুনীতির কাহিনী জানাইয়া দিলে সব নষ্ট হইয়া যাইবে । সুখে শান্তিতে জীবন-যাপনের যে সম্ভাবনা তার দেখা দিয়াছে চিরদিনের জন্য তাহা হইয়া যাইবে অসম্ভব।