পাতা:সার্বজনীন - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ট্ৰেণ হু হু করে ছুটেছে। রাত্রির অন্ধকার ভেদ করে । গাড়ীর মধ্যে টিমটিমে আলো । যাত্রীরা ঠাসাটাসি গাদাগাদি করে কোন রকমে নিঃশ্বাস নিয়ে অস্তিত্ব বজায় রেখেছে। ষ্টীমারেও ভিড় ছিল DDD BD D DDD DBDLL BBB BBB DBD DS BDBBB BBBD DD আরেকটু নরম হত তাহলে সকলে বোধ হয় তালগোল পাকিয়ে একটা মাত্র মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়ে যেত ! তবু, এর মধ্যেও মানুষের প্রাণ যে কত উদার তার প্রত্যক্ষ বাস্তব প্ৰমাণ মিলছে । এ অবস্থায় আত্মরক্ষার অন্ধ স্বার্থপরতাকে পৰ্য্যন্ত ছাড়িয়ে উঠে যাত্রীরা গাড়ীর একটা কোণ মেয়েদের ছেড়ে দিয়েছে, তারা যাতে একটু স্বস্তিতে বসে যেতে পারে। কারো শোয়ার প্রশ্নই অবশ্য উঠে না। বাচ্চারা শুধুমা বাপের বুকে শোবার ঠাই পেয়েছে। ছোট একটি মেয়ে কোলে নিয়ে একজন অল্পবয়সী বৌ বেঞ্চির কাঠে মাথা হেলান দিয়ে মুষড়ে পড়ে আছে। পাশের অজানা অচেনা মেয়েটি এমনভাবে পাখা নেড়ে হাওয়া খাচ্ছে যাতে বেশী হাওয়া অসুস্থা স্ত্রীলোকটির গায়ে লাগে ! হাতটা যেন তার আপনা থেকে ওই দিকে সরে পাখাটা নাড়ছে ওইভাবে। এটা থার্ড ক্লাশ কামরা। যাত্রী উঠেছে সব ক্লাশেরই। ঘর বাড়ী ফেলে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে দেশান্তরী হবার সময় গাড়ীর কামরা কোন ক্লাশের বিচার বিবেচনা করার সুযোগ হয় নি।