পাতা:সার্বজনীন - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* সার্বজনীন 心心 মধ্যে বেঁধে । কিন্তু উঠবে কোথায় ? ছোট একটা ছেলের দাড়াবার মত স্থানও কোন কামরাতে নেই। প্ৰাণের মায়া ছেড়ে গাড়ীর ছাতের উপরও মানুষ উঠেছে। হঠাৎ দুটি ষ্টেশনের মামামাঝি মাঠের মধ্যে গাড়ীটা থেমে গেল। খানিক পরেই একটা হৈ চৈ গোলমাল শোনা গেল। কয়েকটা গুলির আওয়াজও শোনা গেল। যাত্রীরা নেমে পড়ছিল, চাদরের বাঁধন খুলে পঙ্কজ আর গণেশ নেমে পড়ল । কি ব্যাপার ? গাড়ীতে ডাকাতি হয়ে গেছে। কতগুলি লোহা লঙ্কর ইট পাথর ফেলে রেখে লাইনটা ডাকাতের বন্ধ করেছিল, গাড়ী থামতেই একদল লোক মেয়েদের গাড়ীতে উঠে পড়ে। রিভলবার দেখিয়ে মেয়েদের গায়ের গয়ণা কেড়ে নিয়েছে। অন্য কামরায় যাত্রীরা টের পেয়ে হৈ চৈ করে নেমে আসতে আসতে যা লুট করেছিল তাই নিয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে ডাকাতরা পালিয়ে গেছে। কয়েকজন যাত্রী সাহস করে তাদের পিছু নিয়েছিল, কিন্তু অজানা স্থানে অন্ধকার মাঠ অঙ্গলে বেশীদূর তাড়া করে যেতে পারেনি। অন্ধকারে ডাকাতের সরে পড়েছে। গাড়ীতে আর্মড গার্ড ছিল। তারা একবার ইঞ্জিনের দিকে একবার গার্ডের গাড়ীর দিকে খুব ছুটোছুটি করেছে দেখা গেল। ডাকাতদের যে সব যাত্রী তাড়া করে গিয়েছিল, ফিরে আসতে অন্য যাত্রীরা তাদের ঘিরে ধরে। দেখলেই বোঝা যায় কেউ তারা অসাধারণ মানুষ নয়, সাধারণ হিন্দু-মুসলমান, বাঙ্গালী । হাতে সকলের লাঠি পৰ্য্যন্ত নেই। মানুষ সত্যি কখনও ভীরু হয় না। পৃথিবীতে যেমন দু’চারটে চোর আছে বলে চোর শব্দটা এসেছে, তেমনি কয়েকটা ভীরু আছে ৰলে ভীরু