পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ১০১ ]

করিয়া এক দৌড় মারিল। বরদাবাবু মাজিস্ট্রেট সাহেবকে সেলাম করিয়া আদালতের বাহিরে আসিলেন। কাছারি বরখাস্ত হইলে যাবতীয় লোক তাঁহাকে প্রশংসা করিতে লাগিল, তিনি সে সব কথায় কান না দিয়া ও মকদ্দমা জিতের দরুন পুলকিত না হইয়া বেণীবাবু ও রামলালের হাত ধরিয়া আস্তে২ নৌকায় উঠিলেন।


১৬ ঠকচাচার বাটীতে ঠকচাচীর নিকট পরিচয় দান ও

তাহাদিগের কথোপকথন, তন্মধ্যে বাবুরাম বাবুর

ডাক ও তাঁহার সহিত বিষয় রক্ষার পরামর্শ।


 ঠকচাচার বাড়িটি শহরের প্রান্তভাগে ছিল— দুই পার্শ্বে পানা পুষ্করিণী, সম্মুখে একটি পিরের আস্তানা। বাটীর ভিতরে ধানের গোলা, উঠানে হাঁস, মুর্গি দিবারাত্রি চরিয়া বেড়াইত। প্রাতঃকাল না হইতে২ নানা প্রকার বদমায়েশ লোক ঐ স্থানে পিল২ করিয়া আসিত। কর্ম্ম লইবার জন্য ঠকচাচা বহুরূপী হইতেন—কখন নরম—কখন গরম—কখন হাসিতেন—কখন মুখ ভারি করিতেন—কখন ধর্ম্ম দেখাইতেন—কখন বল জানাইতেন। কর্ম্মকাজ শেষ হইলে গোসল ও খানা খাইয়া বিবির নিকট বসিয়া বিদ্‌রির গুড়গুড়িতে ভড়র২ তামাক্ টানিতেন। সেই সময়ে তাঁহাদের স্ত্রী-পুরুষের সকল দুঃখ-সুখের কথা হইত। ঠকচাচী পাড়ার মেয়ে মহলে বড় মান্যা ছিলেন—তাহাদিগের সংস্কার ছিল যে তিনি তন্ত্রমন্ত্র, গুণকরণ, বশীকরণ, মারণ, উচ্চাটন, তুক তাক, জাদু,