পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দশম পরিচ্ছেদ

আমার দার্শনিক প্রতীতি

১৯১৭ সালে আমার সঙ্গে এক জেসুইট পাদরির ঘনিষ্ঠতা হয়। উভয়ের সমজ্ঞাতব্য বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা হত। ইগ‍্নেশিয়স লয়লা প্রবর্তিত এই জেসুইট পন্থার মধ্যে অনেক কিছু আমার মনকে টানত, যেমন দারিদ্র্য, ব্রহ্মচর্য ও আনুগত্যের প্রতিজ্ঞা। অন্যান্য জেসুইটদের মতো এই পাদরির মনে কোনো গোঁড়ামি ছিল না, হিন্দুশাস্ত্রেও তাঁর দখল ছিল। আমাদের আলাপ-আলোচনায় তিনি স্বভাবতই জেসুইটপন্থী খৃস্টধর্মের পক্ষ থেকে কথা বলতেন, আমি দাঁড়াতাম শঙ্করাচার্যের বেদান্ত মতের দিকে। আমি শঙ্করের মায়াবাদের সমস্ত নিগুঢ় তত্ত্ব বুঝতাম না, কিন্তু মোটামটি কথাটা বুঝতাম, অন্তত তখন মনে করতাম যে বুঝি। একদিন তর্কের মধ্যে পাদরি আমার দিকে ফিরে বললেন, “শঙ্করের বিচার ন্যায়ের দিক থেকে চড়ান্ত তা মানি, কিন্তু অত উঁচু ভিত্তিতে জীবনকে তোলবার ক্ষমতা যাদের নেই, তাদের জন্য আমরা শ্রেষ্ঠধর্মের আগের ধাপটা তৈরি করেছি।”

এক সময়ে মনে করতাম যে পরম সত্যকে মানুষের মনের দ্বারা আয়ত্ত করা যায়, শঙ্করের মায়াবাদই সমস্ত জ্ঞানের মূল। আজ সে কথা পুনর‍ুক্তি করতে দ্বিধা বোধ করব। আজ আমি আর কেবল পরম

১৪৯