পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন যে ভবিষ্যতে মিশ্র বাহিনীরও নায়কত্ব আসবে ভারতীয়দেরই হাতে কিন্তু দুঃখের বিষয় ভারতীয়দের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের ভাবটা অনেক ইংরেজ মহলে অতি প্রবল, তাকে উড়িয়ে দেবার উপায় নেই। উওরে আমরা জানালাম যে আমরা বৃটিশ সেনাদলে কমিশন চাই না এই মর্মে প্রতিশ্রুতি দিতে রাজী আছি, আমাদের লক্ষ্য পেশাদার সৈন্যদলে যোগ দেওয়া নয়, শিক্ষাটাই আমাদের কাম্য। কেম্ব‌্রিজে ফিরে গিয়ে আবার ও. টি. সি-র কর্তাদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করলাম। শুনলাম আপত্তিটা নাকি ওয়ার অফিসের নয়, ইণ্ডিয়া অফিসেরই। আসল ব্যাপার যাই হোক না কেন, কোনো কোনো ইংরেজ মহলে ভারতীয়-বিদ্বেষ কী রকম প্রবল তার একটা নমুনা পাওয়া গেল। আমি যতদিন ছিলাম ততদিনের মধ্যে উপরওয়ালা আমাদের দাবিতে কর্ণপাত করেননি এবং আমার ধারণা সতের বছর আগে যে অবস্থা ছিল তার কিছুমাত্র বদল হয়নি।

মোটের উপর তখনকার দিনে ভারতীয় ছাত্রেৱা কেম্ব‌্রিজে বেশ কৃতিত্বের পরিচয় দিত, বিশেষত লেখাপড়ার ক্ষেত্রে। খেলাধুলোয়ও তাদের স্থান অগৌরবের ছিল না। নৌকোচালানোর ব্যাপারে ভারতীয়দের আরেকটু কৃতিত্ব দেখতে পেলে খুশি হতাম। ভারতবর্ষে বাচখেলা ক্রমশ যেরকম জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তাতে মনে হয় যে ভবিষ্যতে এ ব্যাপারেও ভারতীয় ছাত্রেরা গৌরব অর্জন করবে।

প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে ভারতীয় ছাত্রদের বিদেশে শিক্ষার জন্য পাঠানো উচিত কি না এবং পাঠালে কোন বয়সে পাঠানো উচিত। ১৯২০ সালে লর্ড লিটনের গ্রেট ব্রিটেনে ভারতীয় ছাত্রদের অবস্থা আলোচনার জন্য এক সরকারী কমিটির বৈঠক বসেছিল এবং এই প্রশ্ন নিয়ে আলোচনাও হয়। আমার সুচিন্তিত অভিমত হচ্ছে এই যে ভারতীয়

১৩১