চলে না। আবার এখানকার ডলার এময়ে চলে না। সব আলোহিদা ছাপ মারা, তাই অচল। চীন মুলুকের এইটি এক অদ্ভুত ব্যাপার, পঞ্চাশ যাট ক্রোশ গেলে পরেই যেন সব বদলে যায়। ভিন্ন ভিন্ন রকম চীনে ভাষা, ভিন্ন ভিন্ন মুদ্রা, ডাকটিকিট, ও আইন। অথচ মানুষ গুলিকে দেখিতে ও তাহাদের রীতিনীতি চীনের দক্ষিণ প্রাস্তু হইতে মাঞ্চুরিয়া অবধি ও চীনের পূর্ব উপকূল হইতে তিব্বত অবধি সবই এক।
পোষ্টাফিস যে স্থানে অবস্থিত তার চারি পাশেই বড় বড় দোকান। ইউরোপীয়ানদের সহিত সমকক্ষ হইয়া এ সকল ব্যবসার দেশে চীনেম্যান ও জাপানীরা ব্যবসা করিতেছে। একটি জাপানী চিত্রকারের দোকানে কতকগুলি অতি সুন্দর সুন্দর চীন-জাপান ও রুষ-জাপান যুদ্ধের ও জাপান দেশীয় গার্হস্থ্যজীবনের এবং অন্যান্য নানা বিষয়ের চিত্র দেখিলাম। চিত্রগুলি সব বড় বড় ও দেখিতে ঠিক যেন সজীব বলিয়া মনে হয়। দু’একটি রেখা দ্বারা আঁকা। চিত্রগুলি এত সুন্দর যে তাহার আবার ফটো তুলিয়া এক একখানি দশ সেণ্ট বিনিময়ে বিক্রয় হয়। তার ক্রেতা অনেক। যে যায় সেই কেনে। আমিও অনেকগুলি কিনে এনেছি। তারই দুই একখানি এই পুস্তকে ছাপাইলাম। তবে একবার ফটো ও আবার উড এনগ্রেভীং হ'য়ে আসল চিত্রগুলির প্রাণ এ ছাপাগুলিতে নষ্ট হ'য়ে গিয়েছে। সে গুলি রঙ ফলান, জীবন্ত চিত্র, -এ ছাপা গুলি আলো-ছায়া বিহীন ছবি মাত্র।
চিত্র দেখিতে আমার বড় ভাল লাগে। দুই তিন ঘণ্টা ঘুরিয়া ঘুরিয়া সে জাপানীর কারখানায় ছবি দেখিয়া বেড়াইতে লাগিলাম। তিনিও যেন কত কালের বন্ধুর মত আমাকে সব দেখাইয়া লইয়া বেড়াইতে লাগিলেন। আমি সাহেব নহি বাঙ্গালী, একথা শুনে তার আত্মীয়তা যেন আরও বাড়িয়া গেল। একটি ঘরে একটী সুন্দর ছবি দেখিলাম, তার ফটো পাইলাম না। এমন সুন্দর সজীব ছবি আমি কথনও কোথায়ও দেখি