পাতা:অক্ষয়-সুধা - অক্ষয়কুমার দত্ত.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( W• ) অনুভব করিতে হইবে কোন শ্রেণীর চিত্রে ঐ শিল্পীর স্বভাবতঃই গভীরতম রসাস্বাদন হইগা থাকে। কোন কোনও লেখক, সাহিত্যরচনায় আত্ম- গোপনের চেষ্টা করিতে পারেন। অর্থাৎ নিজের সত্যসত্যই ভাল লাগুক বা না লাওক, সাহিত্যিক-বিধানের ব্যবস্থানুসারেই শ্মশান, বনস্থল, রাজসতা প্রভৃতি বর্ণনা করিতে পারেন। কিন্তু প্রকৃত রসভাবনাচতুর সমালোচকের নিকট এই প্রকারের কৃত্রিম রচনা আত্মগোপন করিতে পারে না। আমাদের সংস্কৃত সাহিত্যে পরবর্তী যুগের অনেক রচনা এবং সেই সমুদ্যু রচনার অনুকরণে বা আদর্শানুযায়ী রচিত অনেক বাঙ্গালা রচনা এই শ্রেণীর অন্তর্গত। মুতরাং সাহিত্যশিল্পীর হৃদয় ও মন, কোন্ কোন বিষয়ে ও ব্যাপারের আলোচনায়, তাহার স্বরূপের উপলব্ধি করে, তাহ৷ বিশেষ ভাবে ভাবিয়া দেখিতে হইবে॥ কোনও লেখকের রচনাবলী হইতে যদি কতক গুলি বিষয় শিক্ষার্থিগণের জন্য নির্বাচিত করিতে হয়, তাহা হইলে সেই লেখকের মানসপ্রকৃতি নিৰ্ধারণ করিয়া, তাহার সাহিত্যসাধনার লক্ষ্য ও পন্থা বুঝিয়া তদনুযায়ী এই নিৰ্বাচন কার্য্য করিতে হইবে। এমন অনেক লেখক আছেন, যাহাদের সাহিত্যের কোন সুস্পষ্ট লক্ষ্য। বা সুনির্দিষ্ট পন্থা নাই। এই শ্রেণীর লেখকগণ, দুই একটি খণ্ড রচনায় যশোলাভ করিয়া সাময়িক-সাহিত্যে প্রভাব। বিস্তার করিতে পারেন, কিন্তু র্তাহার পক্ষে সাহিত্যক্ষেত্রে স্থায়ী চিহ্ন রাথিয়া | যাওয়া অসম্ভব। অনেক সাহিত্যশিল্পীতাহার লক্ষ্য ও পন্থা এবং তাহার মানস-প্রকৃতির বৈশিষ্ট্য নিজে না জানিতে পারেন, তাহাতে কিছু ক্ষতি বৃদ্ধি নাই। ধাহারা সাহি- ত্যের সমালোচক ও প্রকৃত ব্যাখ্যাতা তাহারা এই লক্ষ্যপন্থা ও মানসিক বৈশিষ্ট্য নিদ্ধারণ করিবেন— ইহাই সাহিত্যশিল্পীয় নিজত্ব। এই নিজত্বের পূর্ণ বিকাশ, মানবজীবনকে প্রকৃত প্রস্তাবে মহিমান্বিত করে।