পাতা:অক্ষয়-সুধা - অক্ষয়কুমার দত্ত.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( • ) সাহেবের মতে রাজা ঈশ্বরবিশ্বাসী বেস্থামমতাবলম্বী ছিলেন। অবশ্য রাজা রামমোহন রায়ের মতের বিস্তৃত আলোচনা বৰ্তমান প্রসঙ্গে আমাদের অধিকার বহির্ভূত। আমাদের বক্তব্য এই যে, রাজা রামমোহন রায়ের প্রভাব, নানা মূর্ত্তিতে বঙ্গীয় সমাজে আত্ম-প্রকাশ করিয়াছিল। Hindu Theo-Philanthropical Societyর সভ্যের, রাজা রামমোহন রায়কে গুরু বা পথ-প্রদৰ্শকরূপে স্বীকার করিতেন—কিন্তু ব্রাহ্মসমাজের উপর তুষ্ট ছিলেন না। রাজা রামমোহন রায় যে কেমন ‘রহস্য', ইহা হইতেই তাহা বুঝিতে পারা যায়।

  যাহা হউক, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় প্রত্যক্ষ ভাবে রাজা। রামমোহন রায়ের ভাবরাজ্যের উত্তরাধিকারী হইয়া রাজার সাধনার পতাকা হস্তে লইয়া, কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করিলেন।

                    ( ৪ )

  নব্যবঙ্গের ভাবজীবনের ইতিহাসে ‘তত্ত্ববোধিনী সভা’ ও ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা', এক সময়ে সর্বাপেক্ষা বৃহৎ ও শক্তিশালী ব্যাপার ছিল। এই পত্রিকা যাহা করিয়াছেন, সেই কার্য্যসাধনে অক্ষয়কুমার দত্ত মহাশয়ের কৃতিত্ব সর্বাপেক্ষা অধিক। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় এই সভার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। অক্ষয়কুমার র্তাহার সহিত অনেক সংগ্রাম করিয়াছেন সত্য, কিন্তু তাহা হইলেও তিনি দেবেন্দ্রনাথেরই প্রধান সেনাপতি ছিলেন। অক্ষয়কুমার যখন সাধনক্ষেত্রে প্রবিষ্ট হইলেন তথন দেথিলেন, দেশের ও আমাদের জীবনের সর্বত্রই অতি ভয়ঙ্কর জড়তা। আমাদের এই প্রাচীন দেশের নরনারী নানারূপ ভ্রান্ত সংস্কারে ‘শৃঙ্খলবদ্ধ হইয়া, একেবারে জড়বৎ পড়িয়া রহিয়াছে। বাহিরে বিশাল ও বিচিত্র জগৎ, চারিদিকে উন্নতিশীল নানাজাতির বিচিত্র সাধনা ও উদ্যম;–কিন্তু আমরা একেবারেই অসাড় ও নিম্পন্দ! আমাদের বুদ্ধিকে নিগড়মুক্ত করিয়া, স্বাধীন চিন্তায় দীক্ষিত