পাতা:অক্ষয়-সুধা - অক্ষয়কুমার দত্ত.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ১৪০/• ) বিচার পূর্বক কোনও বিষয়ে একটা সুস্পষ্ট বা মুনিদ্ধারিত সিদ্ধান্তে উপস্থিত হইতে পারে না। প্রত্যেক বিষয় ও ব্যাপার, নানা প্রকারে। নানা দিক হইতে আলোচনা করিতে পারা যায় এবং প্রতিকূলে ও অন্থকূলে। নানা প্রকারের কথা বলিতে পারা যায়। এই প্রকারের প্রত্যেক ব্যাপার। সম্বন্ধে যত প্রকারের চিন্তা ও সিদ্ধান্ত সম্ভব, কোনও লোক যদি বাসিয়া বসিয়া, তাহাই আবিষ্কার করিতে থাকে, তাহা হইলে আমরা সেই লোকের পাণ্ডিত্যের ও বহুজ্ঞতার প্রশংসা না করিয়া পারি না সত্য, কিন্তু সেই প্রকারের লোক লইল্লা বাস্তব জগতের প্রয়োজন সাধন, অনেক সময়েই অসম্ভব ও কষ্টকর হইয়া পড়ে। মানুষ মাত্রেই সামাজিক জীব। সাহিত্য ও সামাজিক প্রয়োজনকে, সে উপেক্ষা করিতে পারে না। অনেক সময়ে সমাজে এমন অবস্থ| আসিয়া উপস্থিত হয়, যখন অস্পষ্টতা অনিষ্টকর। তথন সকল বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট। সিদ্ধান্ত একান্তভাবে আবশ্যক। অক্ষয়কুমারের &গ তাহার রচনাবলীর। সাহায্যে এবং সেই সময়কার অন্যান্য সহিত্যিকের সাহয্যে আলোচনা করিলে মনে হয়, উহ৷ সকল বিষয়েই একটি সুস্পষ্ট সিদ্ধান্তের যুগ। এই সিদ্ধান্ত সমূহ অভ্রান্ত কিনা, তাহার আমরা আলোচনা করিতেছি না; এক যুগের যাবতীয় সিদ্ধান্ত অপর যুগে অভ্রান্ত বলিয়াকখনও গৃহীত হয় না। কিন্তু সামাজিক জীবনের এমন দিন আসে, যখন যাহা হউক একটা সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত এবং সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কর্ম্ম আবশ্যক হইয়া পড়ে। সর্ববিধ অস্পষ্টতা বিবর্জিত বীরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের যুগকে, ইংরাজীতে Positivistic Age বলে - বৈজ্ঞানিকতার প্রতিষ্ঠার দ্বারা এই যুগ সম্ভব হয়। অক্ষয়কুমারের পর, বাঙ্গালা দেশে সাহিত্যে এবং জীবনে যে যুগ আসিল, সেই যুগকে আমরা দার্শনিকের সংশয়পূর্ণ অস্পষ্টতা ও কাল্পনিকতার যুগ। (The Age of Metaphysical Doubts and Fancies) বলিলে।