পাতা:বুয়র ইতিহাস - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বুয়রদিগের উৎপত্তি

নিমিত্তই এই গ্রন্থের অবতারণা। বিষয়টা সাতিশয় গুরুতর, সুতরাং ইহা কতদুর সুসম্পন্ন করিতে পারিব, তাহ। এখন বলিতে পারা যায় না।

 দক্ষিণ আফ্রিকার আদিম অধিবাসিগণ নিতান্ত অসভ্য জাতির মধ্যে পরিগণিত ছিল। তাহারা ঐ প্রদেশের ভিন্ন ভিন্ন স্থানে জঙ্গল আশ্রয় করিয়া বাস করিত। উহারা তিন সম্প্রদায়ে বিভক্ত ছিল। প্রথম বুসমেন্‌ (Bushmen), দ্বিতীয়—হটেণ্টট‌্ (Hottentot), তৃতীয়—বাণ্টু (Bantu)।

 বুসমেনজাতীয় অধিবাসিগণ কৃষিকার্য্য জানিত না, শীকারলব্ধ জীব জন্তুগণের মাংসে অপনাপন উদর পূর্ত্তি করিত। তাহাদিগের অন্ত্রের মধ্যে ছিল,—তীর ও ধনুঃ। তীরের অগ্রফলকে এক প্রকার বিষ থাকিত। ঐ তীরাগ্রন্থ তীক্ষ্নফলক নিতান্ত অল্পপরিমাণেও কোন জীব জন্তুর অঙ্গে প্রবিষ্ট হইলে, আর তাহার রক্ষ ছিল না; দেখিতে দেখিতেই তাহাকে কালগ্রাসে পতিত হইতে হইত। ইহার নিতান্ত অসভ্য সত্য, কিন্তু ইহারা যে ধর্ম্ম মানিয়া থাকে, সেই ধর্ম্ম হইতে সহজে এমন কি বহু প্রলোভনেও বিদ্যুত হইতে চাহে না। অষ্টাদশ শতাব্দীতে অনেক খ্যাতনামা পাদরিগণ ইহাদিগকে খ্রীষ্টধর্ম্মে দীক্ষিত করিবার নিমিত্ত প্রাণপণে চেষ্টা করিয়াও কিন্তু একটীকেও তাহাদিগের স্বধর্ম্ম পরিত্যাগ করাইতে পারেন নাই।

 বুসমেন্‌জাতি যেমন অসভ্য, হটেণ্টট্‌জাতি কিন্তু ততটা অসভ্য ছিল না। তবে বুস্‌মেনের মধ্যে একবিবাহ প্রথা প্রচলিত থাকিলেও, হটেণ্টট্‌দিগের মধ্যে বহুবিবাহ প্রথা প্রচলিত ছিল। একজন পুরুষ যত ইচ্ছা তত বিবাহ করিতে পারিত। হটেণ্টট্‌