পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
রূপসী বোম্বেটে

 রাইমার বলিল, “সিনোরিটা, আপনি বড়ই “চতুরা, আমি পূর্ব্বে আপনার বুদ্ধির পরিমাণ করিতে পারি নাই। আমি আপনার নিকট পরাজয় স্বীকার করিলাম, আপনার পাখা আপনি লউন।”

 আমেলিয়া পিস্তলটি পকেটে ঘুরিয়া পাখাখানি তুলিয়া লইলেন, তাহার পর মৃদু স্বরে বলিলেন,“আমিও তোমাকে একটি গল্প বলিতেছি, আশা করি গল্পের তাৎপর্য বুঝিতে তোমার কষ্ট হইবে না। আমার গল্পের নায়িকা কেবল সুন্দরী নহেন, অসাধারণ বুদ্ধিমতী, সম্ভ্রান্ত সমজের সর্বত্র তাহার অব্যাহত গতি। তিনি একটি নূতন দেশে গিয়া একটি বলের মজলিসে উপস্থিত হন; কিন্তু সে দেশে তিনি বাস করেন; সেই রাজ্যের রাজধানীর বন্দরে তাহার নিজের যে জাহাজ আছে সেই জাহাজে তিনি বাস করেন। বলের মজলিসে এক চতুর যুবক গোপনে থাকিয়া যুবতীর কেনিও একটি কাজ দেখিতে পায়। যুবক মনে করিয়াছিল—সে সহজেই যুবতীকে বশীভূত করিতে পারিবে, তাহার অভিষ্ট সাধনে বিলম্ব হইবে না,—কিন্তু ইহা যুবকের ভ্রম মাত্র; সে পূর্ব্বে যুবতীর শক্তি সামর্থ্যের পরিচয় পায় নাই বলিয়াই তাহার এরূপ বিশ্বাস হইয়াছিল। যাহা হউক, যুবতী সেই চতুর যুবককে বুদ্ধি-কৌশলে পরাজিত করিয়া তাহাকে হতভম্ব করেন। কিন্তু যুবকটিকে তিনি তাঁহার নিজের দলভুক্ত করিয়া লইতে সম্মত আছেন; অর্থোপার্জ্জনে সে লাভের যথাযোগ্য অংশ পাইবে, কিন্তু তাহাকে কয়েকটি অঙ্গীকারে আবদ্ধ হইতে হইবে যুবতীর প্রস্তাবে সম্মত না হইলে যুবক কোনও বিষয়ে তাঁহার সাহায্য পাইবে না।”

 রাইমার বলিল, “গল্পটি বড়ই মনোরম, সুতরাং যুবতী সেই হতভম্ভ যুবকের নিকট কি প্রস্তাব করিলেন, তাহা আমার জানিবার আগ্রহ হইয়াছে।”