পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রূপসী বোম্বেটে
২৫

যাই যে বিস্মিত হইতে হয়, এরূপ নহে, তাহা নিম্মণে শিল্পীর অন্য প্রকার বাহাদুরীরও পরিচয় পাওয়া যায়। এই প্রকার পাখার হাণ্ডেলের নিম্মপ্রান্তে একটি গুপ্ত স্প্রিং থাকে, সেই প্রিং টিপিলে একটি ক্ষুদ্র ডালা খুলিয়া যায়; ডলার নীচে যে গুপ্ত গহ্বর থাকে তাহাতে গোপনীয় চিঠি-পত্র, প্রণয়ীর লকেট প্রভৃতি অনায়াসে লুকাইয়া রাখা চলে। এমন কি, কারুকার্যখচিত বহুমূল্য হীরক হার পর্যন্ত সেই গুপ্ত গুহায় লুকাইয়া রাখিলে কেহ তাহার সন্ধান পায় না। আপনার এই পাখা খানিও ভিনিসের পাখা বলিয়া বোধ হইতেছে; যদি সত্যই তাহা হয়, তাহা হইলে ইহার হাণ্ডেলের মধ্যেও গুপ্ত গহ্বর আছে।—আছে কি না আপনি কি কোনও দিন তাহা পরীক্ষা করিয়া দেখেন নাই?”

 আমেলিয়া বিস্ফারিত নেত্রে রাইমারের মুখের দিকে চাহিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কে তুমি?”

 রাইমার বলিল, “সে কথা আপনাকে বলিতে আমার কিছুমাত্র আপত্তি নাই; কিন্তু আমি ত পূর্ব্বেই বলিয়াছি আপনাকে বড়ই পরিশ্রান্ত দেখাইতেছে, বিরাম-কুঞ্জে কিছুকাল বিশ্রাম করিলেই আপনি সুস্থ হইবেন।”

 রাইমারের স্বরে কিঞ্চিৎ বিদ্রুপের আভাস ছিল, বিশেষতঃ পাখাখানি তখন, পর্য্যন্ত তাহার হাতেই ছিল। আমেলিয়া ভয় কাহাকে বলে তাহা জানিতেন না, কিন্তু এই অপরিচিত ভদ্রলোকের ব্যবহার তাঁহার নিকট কেমন রহস্যপূর্ণ বোধ হইল। তাঁহার মন চঞ্চল হইয়া উঠিল; তিনি ভাবিলেন “লোকটা কি হার-চুরীর। সন্ধান পাইয়াছে?—এ পুলিসের গোয়েন্দা না কি! না কোনও ছদ্মবেশী তস্কর, চুরীর উপর বাটপাড়ী করিতে আসিয়াছে?—লোকটা