পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
১০১

 মিঃ পিয়ারসন বলিলেন, “ইহাতেও তোমার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয় নাই? আর কত কষ্ট দিবে? স্বামি তোমার অনুগ্রহ ভিক্ষা করি না; জানি, তোমার সে ভিক্ষা দানের শক্তি নাই। আমি তোমাদের সর্ব্বস্বান্ত করিয়াছি, এ অপবাদের প্রতিবাদ করিবারও ইচ্ছা নাই; কারণ, আমি তোমাদের হিতাকাক্ষী ছিলাম,এ কথা বলিলে তুমি তাহা বিশ্বাস। করিবে না। তুমি নারী, এই জন্যই তোমার হৃদয়ের দোহাই দিতেছি; তুমি একবার মেন্‌ডোজার অভাগিনী কন্যার কথা চিন্তা কর। তাহাকে শোকের সমুদ্রে ভাসাইও না; সে আমাকে ভালবাসে, তাহার হৃদয় বিদীর্ণ করিও না। আমাকে হারাইয়া সে কি বাঁচিবে?—তোমার ইচ্ছা হয়, টাকাগুলা আত্মসাৎ কর, আমার আরও অধিক কলঙ্ক প্রচারিত কর; কিন্তু একবার তাহাকে জানাও আমি তস্কর নহি, আমি তাহার প্রণয়ের অযোগ্যও নহি। তুমি বোধ হয় জান না; আমি আমার পুরাতন কপট বন্ধুগণের সংশ্রব বিষের মত ত্যাগ। করিয়াছি; আমার প্রকৃতির সম্পূর্ণ পরিবর্ত্তন হইয়াছে। আমি অক্লান্ত পরিশ্রমে নিজের শক্তিতে যে উন্নতি লাভ করিয়াছি, যে সম্মানের অধিকারী হইয়াছি, আমি তাহার অযোগ্য নহি; ইহার। মধ্যে কোনও প্রকার প্রতারণা প্রবঞ্চনা নাই। কিন্তু তোমার ব্যবহারে আমার সে গৌরব,—মান সন্ত্রম সমস্তই নষ্ট হইয়াছে। আমার মান সম্রম, পদমর্য্যাদা আর যে ফিরিয়া পাইব, সে আশা নাই। ইহাতেও কি তুমি সন্তুষ্ট নও? মানুষের প্রতিহিংসা ইহা অপেক্ষা আর কত দূর কঠোর হইতে পারে?—মেন্‌ডোজা-কুমারী তোমার কোনও অনিষ্ট করেন নাই; তাঁহার জীবনের সুখ নষ্ট করিও না। আমার অপরাধে তাঁহার হৃদয় মরুভূমিতে পরিণত করিও না।”