পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম পরিচ্ছেদ
১০৯

দেখিলাম, ক্ষতমুখ হইতে প্রবল বেগে রক্ত ঝরিতেছে, রক্তে আপনার সর্ব্বাঙ্গ ভিজিয়া গিয়াছে; রক্তে সেই স্থানের মাটী পর্য্যন্ত কাদা হইয়াছে। আপনি মৃতবৎ পড়িয়া আছেন। কিন্তু আমি পিশাচী, আমার হৃদয়ে দয়া মায়া নাই; আপনার সেই শোচনীয় অবস্থা দেখিয়াও আমার মনে করুণার উদ্রেক হইল না। আমি আপনাকে এখানে তুলিয়া আনিলাম বটে, কিন্তু আপনাকে বাঁচাইবার জন্য নহে;—আমার ইচ্ছা ছিল, আপনার কাছে যাহা কিছু পাই, তাহা হস্তগত করিয়া আপনার মৃতদেহ কোনও একটা নর্দ্দমায় ফেলিয়া দিব!—কিন্তু আপনাকে এখানে আনিয়া আমার মনের ভাব পরিবর্ত্তিত হইল; কেন হইল,তাহা আমি বলিতে পারি না। বহু দিন হইতে পরের সর্ব্বনাশ করিয়া আসিতেছি; কোনও পাপে আমার সঙ্কোচ নাই, কুষ্ঠ নাই। আমি স্বহস্তে কত লোকের সর্ব্বনাশ করিয়াছি। আমার কবলে পড়িয়া কত ধনবান যুবক সর্ব্বস্বান্ত হইয়াছে, তাহার সংখ্যা নাই; কিন্তু আপনার সর্ব্বস্ব হস্তগত করিয়াও আমি আপনাকে হত্যা করিতে পারিলাম না। হত্যা করা দূরে থাক, আমি আপনার পরিচর্য্যার নিযুক্ত হইলাম; আপনার ক্ষত উত্তমরূপে ধুইয়া ‘ব্যাণ্ডেজ’ বাঁধিয়া দিলাম; যাহাতে আপনার প্রাণ রক্ষা হয়—আহার নিদ্রা ত্যাগ করিয়া সেই চেষ্টা করিতে লাগিলাম। আপনার পকেটে যাহা কিছু ছিল, তাহা বাহির করিয়া লইয়া সিন্দুকে রাখিয়াছি; আমি কিছুই আত্মসাৎ করি নাই, কেবল আপনার পরিচর্য্যার জন্য ঔষধাদি কিনিতে যে দুই এক টাকা লাগিয়াছে-তাহাই খরচ করিয়াছি মাত্র।”

 পতিতা স্পেনীয় যুবতীর কথা শুনিয়া মিঃ ব্লেকের বিস্ময়ের সীমা রহিল না,কয়েক মিনিট পর্য্যন্ত তিনি বাঙ্‌নিস্পত্তি করিতে পারি-