পাতা:পদাবলী-মাধুর্য্য.djvu/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬৪
পদাবলী-মাধুর্য্য
৬৪

 সুতরাং মাথুর পালার পরে রাধাকৃষ্ণ লীলার সম্পূর্ণ ছেদ হইবার কথা।

 কিন্তু এদেশে মহাপ্রভু লীলা করিয়া গিয়াছেন। তৎপূর্ব্বে মাধবেন্দ্র পুরী প্রেমের সেই রাজরাজেশ্বরের মধুকর ডিঙ্গার জন্য খাত কাটিয়া গিয়াছিলেন। এখানে ব্রজের নাম “নিত্য বৃন্দাবন,” কৃষ্ণলীলার এখানে অন্ত স্বীকৃত হয় নাই। শাস্ত্র মানিয়া যেখানে অন্যান্য দেশের বৈষ্ণবেরা সম্পূর্ণ বিরাম-চিহ্ন দিয়াছিলেন, বাঙ্গালী তাহা মানিয়া লইল না।

 এখানে বিদ্যাপতিচণ্ডীদাস “ভাব-সম্মেলন” নামক মাথুরের পরে আর একটা অধ্যায়ের সৃষ্টি করিয়া পূজার ঘরের হোমানল জ্বালাইয়া রাখিলেন। এই আহিতাগ্নিকদের পবিত্র অগ্নির নির্ব্বাণ নাই। রাধিকা দেহ-সম্বন্ধ-বিচ্যূত হইয়া চিন্ময় রূপে ভগবানকে ফিরিয়া পাইলেন, ইহাই “ভাবসম্মেলন”। পূর্ব্বে শ্যামকুণ্ড, রাধাকুণ্ড ও মদনকুঞ্জের নিকটে গেলে কৃষ্ণকে পাওয়া যাইত, “যাঁহা ধেনু সব করতহি রব” সেই গোষ্ঠের পথে নীপতরুমূলে সখাদের মধ্যে তাহাকে পাওয়া যাইত, দ্বাদশ বনের উপান্তে যমুনাতীরের পুষ্পকুঞ্জে তাঁহার বিলাস হইত, আজ সে দিন ফুরাইয়াছে,

আজ “ব্রজকুল আকুল, দুকুল কলরব,
 কানু কানু করি ঝুর।
আজ যশোবতী নন্দ, অন্ধসম বৈঠত,
 কোকিলা না করতহি গান।
কুসুম ত্যজিয়া অলি ক্ষিতিতলে লুটই–
 তরুগণ মলিন সমান।”

আজ সখাগণ, ধেনুগণ বেণুরব ভুলিতে চলিয়াছে; কারণ তাহাদের