নবজাতক/শেষ দৃষ্টি

উইকিসংকলন থেকে

শেষ দৃষ্টি

আজি এ আঁখির শেষ দৃষ্টির দিনে
ফাগুন বেলার ফুলের খেলার
দানগুলি লব চিনে।
দেখা দিয়েছিল মুখর প্রহরে
দিনের দুয়ার খুলি
তাদের আভায় আজি মিলে যায়
রাঙা গোধূলির শেষ তুলিকায়
ক্ষণিকের রূপ-রচন-লীলায়
সন্ধ্যার রং-গুলি॥
যে অতিথিদেহে ভোরবেলাকার
রূপ নিল ভৈরবী,
অস্তরবির দেহলি দুয়ারে
বাঁশিতে আজিকে আঁকিল উহারে
মূলতানরাগে সুরের প্রতিমা
গেরুয়া রঙের ছবি॥

খনে খনে যত মর্মভেদিনী
বেদনা পেয়েছে মন
নিয়ে সে দুঃখ ধীর আনন্দে
বিষাদ-করুণ শিল্পছন্দে
অগোচর কবি করেছে রচনা
মাধুরী চিরন্তন॥
একদা জীবনে সুখের শিহর
নিখিল করেছে প্রিয়।
মরণ পরশে আজি কুণ্ঠিত,
অন্তরালে সে অবগুণ্ঠিত
অদেখা আলোকে তাকে দেখা যায়
কী অনির্বচনীয়॥
যা গিয়েছে তার অধরারূপের
অলখ পরশখানি
যা রয়েছে তারি তারে বাঁধে সুর,
দিক সীমানার পারের সুদূর
কালের অতীত ভাষার অতীত
শুনায় দৈববাণী॥

সেঁজুতি ১২।১।৪০