পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাধুতার পুরস্কার।
৪১

পাপীয়সী আর কেহ নাই। আর, যদি এ জন্য আমার বিবাহ না হয়, আমি তাহাতেও দুঃখিত নহি।

 এই উপলক্ষে বিলক্ষণ বিবাদ উপস্থিত হইল। গৃহস্বামিনী ও বর উভয়ে, নির্দ্ধারিত দিবসে বিবাহ হওয়া আবশ্যক বলিয়া পীড়াপীড়ি করিতে লাগিলেন, সুজেট্‌ কোনও ক্রমে সম্মত হইল না। অবশেষে গৃহস্বামিনী, কুপিত হইয়া তাহাকে তাড়াইয়া দিলেন, এবং বরও, আর আমি তোমায় বিবাহ করিব না বলিয়া, সম্বন্ধ ভাঙ্গিয়া দিল। সুজেট্‌ তাহাতে কিছুমাত্র দুঃখিত বা উৎকণ্ঠিত না হইয়া, তৎক্ষণাৎ তথা হইতে প্রস্থান করিল, এবং পিতৃব্যের আলয়ে উপস্থিত হইয়া, অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ার আয়োজন করিতে লাগিল।

 যথাবিধানে অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া সম্পন্ন করিয়া সুজেট্‌ বিরলে বসিয়া, পিতৃব্যের শোকে বিলাপ ও পরিতাপ করিতেছে, এমন সময়ে, এক সুশ্রী সুবেশ যুবা পুরুষ সেই স্থানে উপস্থিত হইলেন। ইনি, বহুদিন অবধি, সুজেট্‌কে জানিতেন, তাহার কর্ম্মচ্যুত হওয়ার ও সম্বন্ধ ভাঙ্গিয়া যাওয়ার কারণ অবগত হইয়াছিলেন। ইনি বিলক্ষণ সঙ্গতিপন্ন, এ পর্য্যন্ত বিবাহ করেন নাই, এক্ষণে সুজেট্‌কে বিবাহ করিবেন, স্থির করিয়া তাহাকে আপন আলয়ে লইয়া যাইতে আসিয়াছিলেন।

 সুজেট্‌ এই ব্যক্তিকে সুশীল, সচ্চরিত্র ও বিলক্ষণ সঙ্গতিপন্ন লোক বলিয়া জানিত, ইহাকে সহসা উপস্থিত দেখিয়া, শোক সংবরণ পূর্ব্বক, উঠিয়া দাঁড়াইল। ঐ ব্যক্তি ঈষৎ হাস্য করিয়া সাদর বচনে কহিলেন, সুজেট্‌। শুনিলাম, তুমি কর্ম্মচ্যুত