পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মাতৃবৎসলতা।
৫৫

ভরণ পোষণ নির্ব্বাহের এবং সেই দুই বালকের উত্তমরূপ বিদ্যা শিক্ষায়, বিশিষ্টরূপ ব্যবস্থা করিয়া দিলেন।


মাতৃবৎসলতা।

 রোম নগরের কোনও সৎকুলপ্রসূতা নারী উৎকট অপরাধ করাতে, বিচারকর্ত্তারা, প্রাণদণ্ডের আদেশ বিধান করিয়া, তাহাকে কারাগারে অবরুদ্ধ করেন, এবং কারাধ্যক্ষকে আদেশ দেন, অমুক দিন, অমুক সময়ে, অমুক স্থানে, এই স্ত্রীলোকের প্রাণদণ্ড করিবে। সহসা তাঁহাদের আদেশ অনুযায়ী কর্ম্ম সমাধা না করিয়া, কারাধ্যক্ষ বিবেচনা করিলেন, সর্ব্বসাধারণ সমক্ষে বধস্থানে লইয়া গিয়া, এরূপ সদ্বংশসম্ভূতা নারীর প্রণদণ্ড করিলে, ইহার আত্মীয়বর্গের মস্তক অবনত হইবে, তদপেক্ষা উত্তম কল্প এই, আহার বন্ধ করিয়া রাখি, তাহা হইলে অল্প দিনের মধ্যে অনাহারে ইহার প্রাণাত্যয় ঘটিবে। মনে মনে এই সিদ্ধান্ত করিয়া, তিনি ঐ স্ত্রীলোককে অনাহারে রাখিয়া দিলেন।

 অবরোধের পর দিন, তাহার কন্যা আসিয়া, কারাধ্যক্ষের নিকট, জননীকে দেখিতে যাইবার অনুমতি প্রার্থনা করিল। তিনি সবিশেষ পরীক্ষা দ্বারা, তাহার সঙ্গে কোনও প্রকার আহার সামগ্রী নাই দেখিয়া, তাহাকে কারাগৃহে প্রবেশ করিতে অনুমতি দিলেন। কন্যা, তদবধি প্রতিদিন, মাতৃসমীপে যাতায়াত করিতে লাগিল।