পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার এই কথাগুলো লেখার উদ্দেশ্য আফগানিস্তানের সোভিয়েতপন্থী কমিউনিস্ট সরকার বা মুজাহেদিনদের সমর্থন বা অসমর্থন নয়। আমি আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক সমাজ-চিত্র তুলে ধরে এটুকুই প্রমাণ করতে চাইছি, 'ধর্ম বিশ্বাস'-এর উপর একটি সমাজের সামগ্রিক মূল্যবোধের উন্নতি নির্ভর করে না।

 কারণঃ দুই—প্রাচীনকাল থেকে আধুনিক কালের ধর্মগুরু, ধর্মযাজক, পীর-মোল্লাদের ইতিহাসের দিকে প্রিয় পাঠক-পাঠিকারা ফিরে তাকান। স্বচ্ছ দৃষ্টি নিয়ে তাকান। দেখতে পাবেন, এইসব নীতিজ্ঞানী ধর্মীয়বেত্তাদের জীবনে সদাচারের বদলে বার বার জড়িয়ে গেছে ঐশ্বর্যলিপ্সা, বিলাসিতা, ক্ষমতালিপ্সা, দুর্নীতি, ব্যভিচার, বিকৃত-কামনা, ভ্রান্ত-চিন্তা, মিথ্যাচারিতা ইত্যাদি নানা কদাচার। প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম যেখানে ধর্মগুরুদের কদাচারেই লাগাম লাগাতে পারেনি, সেখানে সাধারণ মানুষদের সদাচার শেখাবে কীভাবে?

O

প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম যেখানে ধর্মগুরুদের কদাচারেই লাগাম লাগাতে পারেনি, সেখানে সাধারণ মানুষদের সদাচার শেখাবে কীভাবে?

O

 কারণ: তিন—১৯৮৮ সালে আমাদের দেশের ১০০ জন অপরাধীর উপর একটি ‘সার্ভে' বা 'তথ্যানুসন্ধান'-এর কাজ চালিয়েছিল ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি'। বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের এজন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। এই ১০০ জন অপরাধিদের প্রত্যেকেই কোনও না কোনও প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের সঙ্গে নিজেদের বিশ্বাসকে যুক্ত করে হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান বলে পরিচয় দিয়েছিল। এরা প্রত্যেকেই আত্মা, পরমাত্মা, স্বর্গ-নরক, পাপ-পূণ্য ইত্যাদি প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের আরোপিত বিশ্বাসে পুরোপুরি আস্থাশীল ছিল। এই প্রসঙ্গ নিয়ে 'কারণঃ আটত্রিশ'-এ আরও একটু বিস্তৃতভাবে আলোচনা করেছি।

 প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মগুলোর উপদেশ-ভয়-অলীক বিশ্বাস এইসব অপরাধীদের অপরাধ করা থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি।

 এই আলোচনার পর একথা বলার আর সুযোগ নেই—ধর্মগ্রন্থের নির্দেশিত আচরণবিধি কাঁটায় কাঁটায় মেনে চলাই সদাচার, ধর্মের বিধান থেকে গড়ে ওঠা way of life-ই আদর্শ জীবনদিশা’, ‘পাপ-পুণ্য; স্বর্গ-নরক, ঈশ্বর ও ধর্মে বিশ্বাস মানুষকে অন্যায় কাজ থেকে বিরত করে।


কারণ: বিয়াল্লিশ

পৃথিবী পাপে-অন্যায়ে-দুর্নীতিতে ভরে গেলে ঈশ্বর কি অবতার হয়ে পৃথিবীতে এসে সমাজ’কে ‘পাপ' মুক্ত করবে? এই কি সমাজ পাল্টাবার অনিবার্য উপায়?

পুরানের আমল ছেড়ে ইতিহাসের আমলে পা রাখা থেকে আজ পর্যন্ত যে ইতিহাস

১২৪