পাতা:ভূতের বিচার - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ।
১৯

 কর্ম্ম। তাহাকে দেখিয়া তোমার ভয় হইয়াছিল?

 আবে। দলের একজন লোক আমাকে সঙ্গে করিয়া তাহার নিকট লইয়া যায়, ভূতের কথা শুনিয়া প্রথমেই আমি অতিশয় ভয় পাইয়াছিলাম, পরে তাহাকে দেখিয়া আমি এরূপ ভীত হইয়া পড়ি যে, কিছুক্ষণ পর্য্যন্ত আমার সংজ্ঞা থাকে না। পরে যখন আমার সংজ্ঞা হয়, তখন তিনি আমাকে কহেন, “তোমার কোন ভয় নাই, দলের কোন লোকের আমা হইতে কিছুমাত্র ভয় নাই, আমার দ্বারা তাহাদিগের কোনরূপ অনিষ্ট হওয়া দুরে থাকুক, অপর কেহ তাহাদিগের কোনরূপ অনিষ্ট করিতে পারিবে না। যে কোনরূপে অনিষ্ট করিবার চেষ্টা করিবে, আমি জানিতে পারিলেই, তাহার ঘাড়টী মট্‌কাইয়া রাখিয়া আসিব। তুমি আমার দলে বহুদিন ছিলে, যাও, পুনরায় দলভুক্ত হও। এই কথা বলিয়াই তিনি সেই স্থান হইতে অন্তর্দ্ধান হইলেন, আর তাঁহাকে সেই স্থানে দেখিতে পাইলাম না।

 কর্ম্ম। কোন্ স্থানে তোমার সহিত তাহার সাক্ষাৎ হইয়াছিল?

 আবে। একটী প্রকাণ্ড মাঠের মধ্যস্থলে বৃহৎ ও বহু পুরাতন একটী অশ্বত্থবৃক্ষ আছে, তাহার নিকট একটী বৃহৎ পুষ্করিণী, ঐ পুষ্করিণীর চতুস্পার্শ্বে ভয়ানক জঙ্গলে আবৃত, দিনমানে ঐস্থান বাঘ ভালুকের আবাস স্থল, কোন লোক ভুলক্রমেও সেই স্থানে যায় না, সকলেই জানে, ঐস্থানে ঐ অশ্বত্থ গাছের উপর যত ভূতের আবাস-স্থল।

 কর্ম্ম। ঐ স্থান তুমি আমাদিগকে দেখাইতে পারিবে?

 আবে। তাহা পারিব না কেন?

 কর্ম্ম। তোমার কি অনুমান হয় যে, ঐ ভূত ঐ স্থানেই বাস করিয়া থাকে?

 আবে। তাহা আমি ঠিক বুঝিয়া উঠিতে পারিতেছি না। ভূতের বাসস্থানের ঠিক কি?

 কর্ম্ম। এ বিষয়ে তোমাকে উত্তমরূপে সন্ধান করিতে হইবে।

 আবে। আমি তো তাহারই চেষ্টায় আছি, কিন্তু উহাদিগের সহিত ডাকাইতি করিতে প্রবৃত্ত না হইলে উহারা আমাকে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস করিবে কেন?

 কর্ম্ম। আমি তোমাকে সে বন্দোবস্ত করিয়া দিতেছি, তাহার জন্য তোমার কোন চিন্তা নাই। এখন তুমি তোমার বাড়ীতে যাও, কল্য আসিয়া আমার সহিত সাক্ষাৎ করিও।

 আমার কথা শুনিয়া আবেদ আলি সেই স্থান হইতে প্রস্থান করিল, আমি আমার ঊর্দ্ধতন কর্ম্মচারী ও সেই জেলার সর্ব্বপ্রধান বিচারককে সমস্ত কথা বলিলাম; তাঁহারা অনেক ভাবিয়া চিন্তিয়া কহিলেন, ঐ উপায়ে যদি ডাকাইতের দল ধরা পড়ে, তাহা হইলে ক্ষতি নাই। কিন্তু পূর্ব্ব হইতেই এরূপ