পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
8
ঝাঁশির রাণী।

উদ্ধার সাধনের জন্য, মহারাষ্ট্রাধিপতি বাজীরাও পেশোয়ার শরণাপন্ন হইলেন। পেশোয়া করুণা-পরবশ হইয়া ছত্রশালের সাহায্যে যাত্রা করিলেন, এবং মুসলমান সরদারদিগকে পরাভূত করিয়া ছত্রশালকে স্বরাজ্যে প্রতিস্থাপিত করিলেন। ছত্রশাল কৃতজ্ঞ হইয়া, বুণ্ডেলখণ্ডের কতকগুলি প্রদেশ, পেশোয়াকে নজর-স্বরূপ দান করিলেন। শুদ্ধ তাহাই নহে, মৃত্যুকালে বাজীরাওকে স্বীয় পুত্র-স্বরূপ গণ্য করিয়া, তিন কোটী টাকা আয়ের একটা ভূসম্পত্তি দান করিয়া গেলেন। ইহার অন্তর্ভূত ২০ লক্ষ টাকা আয়ের সম্পত্তি ঝাঁশি-রাজ্য। পরে, ১৭৫৯ খৃষ্টাব্দে ঝাঁশির পূর্বাধিকারী “গোসাবী” রাজার বিদ্রোহী হইয়া পেশোয়ার সুবেদারকে পরাভূত করিল। পেশোয়া এই সংবাদ শুনিবামাত্র রঘুনাথ-হরি-নেবালকর নামক একজন পরাক্রান্ত মারাঠী সরদারকে বুণ্ডেলখণ্ডে পাঠাইলেন। ইনি “গোসাবী” রাজাদিগকে পরাভূত করিয়া তথায় পুনর্ব্বার পেশোয়ার আধিপত্য স্থাপন করিলেন। পেশোয়া ইহাতে পরিতুষ্ট হইয়া ঝাঁশির সুবেদারী পদ রঘুনাথ-হরি-নেবালকরকে বংশপরম্পরাক্রমে প্রদান করিলেন। এই রঘুনাথরাও-হরি-নেবালকর―ইনি মহারাণী লক্ষ্মীবাইর ভর্ত্তৃবংশের আদিপুরুষ।

 রঘুনাথ রাওর বার্ধক্যদশা উপস্থিত হইলে, তিনি স্বীয় কনিষ্ঠ সহোদর শিবরাও-ভাউকে ঝাঁশির সুবেদারী পদে স্থাপন করিলেন। শিবরাও-ভাউ ইনিও একজন বীরপুরুষ। এই সময়ে দ্বিতীয় বাজীরাওর শাসনকালে―মহারাষ্ট্রীয় রাজ্যসূত্র শিথিল হইয়া পড়ায়, পেশোয়ার অধীনস্থ সুবেদারেরা নিজ নিজ অধিকারের মধ্যে স্বাতন্ত্র্য অবলম্বন করে। বুণ্ডেলখণ্ডে, শিবরাও-ভাউও সেই পথ অনুসরণ করেন। এই সময়ে, “বসঁই” (Bassein) সন্ধির সুযোগে, মারাঠী-সাম্রাজ্য মধ্যে ইংরাজদিগের চঞ্চু-প্রবেশ হইয়াছিল মাত্র, তখনও তাঁহারা প্রবল হইতে পারেন নাই। তখন শিন্দে, হোলকার, নাগপুরকর ভোঁসলে প্রভৃতি রণশূর মারাঠী সরদার-