পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।
১১

করিলে, মনুবাই পুরোহিতকে বলিল “ভাল করিয়া দৃঢ়রূপে গ্রস্থিবন্ধন কর”—এই কথা শুনিয়া সেই সময়ে সকলে আশ্চর্যান্বিত হইয়াছিল।

 যাহা হউক, কালক্রমে রাণীর একটা পুত্র সন্তান হইল, কিন্তু দুর্ভাগ্য- ক্রমে, তিনমাসের মধ্যেই করাল কাল তাহাকে হরণ করিল। এই পুত্র- শোকের আঘাতে মহারাজ গঙ্গাধররাও রোগগ্রস্ত হইয়া, ক্রমে আসন্ন দশায় উপস্থিত হইলেন। এই সময়ে তিনি দত্তকগ্রহণেচ্ছু হইয়া স্বীয়বংশের বসুদেবরাও-নেবালকরের পুত্র আনন্দরাওকে, যথাবিধি দত্তক- বিধানানুসারে মহাসমারোহ-সহকারে, দত্তকপুত্ররূপে গ্রহণ করিলেন। পরে ইহার নাম, দামোদররাও-গঙ্গাধররাও রাখা হইল। মহারাজা, এই দত্তকগ্রহণ-সম্বন্ধীয় সমস্ত বৃত্তান্ত বুলেখণ্ডের পোলিটিক্যাল রেসিডেণ্টের নিকট লিখিয়া পাঠাইলেন। অন্যান্য কথার মধ্যে, বংশপরম্পরাক্রমে ঝুঁশির মালিকী স্বত্ব বজায় থাকিবে বলিয়া তাহার পূর্বপুরুষ রামচন্দ্র- রাওর সহিত ইংরাজ-সরকারের কৃত সন্ধিপত্রে যে উল্লেখ ছিল, সে কথাও এই পত্রের মধ্যে একস্থলে সন্নিবেশিত হইয়াছিল। এইরূপে মহারাজা, স্বীয় উত্তরাধিকারের ব্যবস্থা করিয়া, নিশ্চিন্তমনে ইহলোক হইতে অপসৃত হইলেন। এদিকে, বুলেখণ্ডের পোলিটিক্যাল এজেণ্ট, রাজার গৃহীত দত্তকপুত্র ঝাঁশির প্রকৃত উত্তরাধিকারী কি না এই বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করিয়া হিন্দুস্থানসরকারের নিকট স্বীয় মন্তব্য-লিপি লিখিয়া পাঠাইলেন। তাহার মধ্যে এইরূপ কথার সূচনা ছিল যে, আঁশি-রাজ্য খাস করিয়া লইবার অধিকার ব্রিটিশ-সরকারের আছে এবং এই অবসর ত্যাগ করা উচিত নহে। তবে, কঁশি খাস করিয়া লইলে, রাণীকে ৫০০০ টাকার মাসিক বৃত্তি দিলে ভাল হয় ইত্যাদি। যখন এই রিপোর্ট হিন্দুস্থান সরকারের নিকট প্রেরিত হয়, তখন লাট সাহেব ডালহৌসী অযোধ্যায় ভ্রমণ করিতে গিয়াছিলেন। সেই জন্য ছয়মাস কাল এই পত্রের কোন উত্তর আসে নাই। মহারাণী লক্ষ্মী বাইর সম্পূর্ণ আশা ভরসা ছিল যে, কৃপালু ব্রিটিশ-