ধম্মপদ/চিত্তবর্গ
তৃতীয় সর্গ―চিত্তবর্গ।
ইষুকার[১]যেইরূপ করিয়া যতন,
সরল করিয়া বাণ করে সুগঠন,
বুদ্ধিমান রহে তথা করি আত্মবশ
[২]চপল স্পন্দনশীল দুর্দ্দান্ত মানস॥১॥৩৩॥
উৎক্ষিপ্ত সলিল হ’তে হ’লে তীর’পরে
যেমতি চঞ্চল মৎস্য ছট্ফট্ করে,—
তেমতি মােহের হাতে পাইতে নিস্তার
ব্যাকুল মানব চিত্ত হয় অনিবার॥২॥
দুর্দ্দম চঞ্চলচিত্ত করিবে দমন
বশীকৃত চিত্তে দেয় শান্তি অনুক্ষণ॥৩॥
দুর্দ্ধর্ষ চতুর যত মনােবৃত্তিচয়।
তা’রা যেন ইতস্ততঃ চালিত না হয়;
রাখিবে তা’দের প্রতি লক্ষ্য বুদ্ধিমান,
সুসংযত চিত্তে করে সুখের বিধান॥৪॥
দূরগামী, একচারী[৩] অশরীরী আর
হৃদয়ের গুহাশায়ী যে চিত্ত সবার;
এহেন চপলমতি বশে যা’র রয়
সংসারের মােহ তা’র নাহি কোন ভয়॥৫॥
যাহার অস্থির চিত্তে সতত বিকার,
সত্য-ধর্ম্ম সুবিদিত নহে কভু যা’র,
সতত প্রসাদশূন্য, যাহার হৃদয়,
জ্ঞানের পূর্ণতা তা’র কভু নাহি হয়॥ ৬॥
বাসনা বিহীন চিত্ত যাহার সতত
যাহার মানস কভু নহে বিচলিত,
পাপ পুণ্য ক’রেছেন যিনি পরিহার,
যেজন জাগ্রত, ভয় নাহিক তাহার॥ ৭॥
কুম্ভবৎ এ দেহকে নশ্বর জানিয়া,
দুর্গবৎ সুরক্ষিত চিত্তকে করিয়া,
প্রজ্ঞারূপ অস্ত্রদ্বারা হ’য়ে সুসজ্জিত
জয়লাভ কর যুদ্ধে মোহের সহিত;
সকল আসক্তিশূন্য হইয়া সংসারে
আপনারে কর রক্ষা যত্ন সহকারে॥ ৮॥ ৪০॥
ঘৃণিত, চৈতন্যহীন এ শরীর হায়!
প’ড়ে র’বে শীঘ্র তুচ্ছ কাষ্ঠখণ্ড প্রায়॥ ৯॥
হিংসাকারী হিংসা করি যেই ক্ষতি করে,
শত্রু’পরে শত্রু যাহা অনিষ্ট আচরে,
তদপেক্ষা বেশী ক্ষতি হয় তাহাদের-
সতত বিপথগামী চিত্ত যাহাদের॥ ১০॥
সুচালিত চিত্ত যত করে উপকার।
মাতা পিতা আত্মীয়ের সাধ্য কি তাহার?॥ ১১॥