পাতা:কাফ্রি দাসের বৃত্তান্ত - লী রিচমণ্ড.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০

এক বৃহৎ খালে বিভক্ত অতি সুন্দর ভূমি প্রকাশ হইল। জোয়ারের সময়ে ঐ খাল সমুদ্র জলে পরিপূর্ণ হইয়া দেড় ক্রোশ পরিমিত প্রশস্ত হদের ন্যায় হয়। তাহার চতুর্দিগে যে২ বন ও গ্রাম ও ঘর ও ভজনালয় দেখা যায় তাহা অতি মনোরম্য।

 ও পারে অর্থাৎ সমুদ্রেতে কতক ক্রোশ ব্যাপিয়া লঙ্গর করা রণজাহাজের বৃহৎ এক বহর ছিল, এবং তাহার নিকটবর্ত্তি বাণিজ্য জাহাজের আর এক বহর দৃষ্ট হইল। বহরের ঐ দিগে এক মহানগরের বন্দর ও দুর্গ ও গুদী ও নানা প্রশস্ত অট্টালিকা দেখিলাম। ঐ সকল অট্টালিকাদির জানালা ও জাহাজের ধ্বজা সূর্য্য কিরণদ্বারা উজ্জ্বলীকৃত হইয়া অতি সৌন্দর্য্য রূপে দৃশ্য হইল।

 ঐ সকল দেখিয়া আমি রাজমন্ত্রিদের সংকল্প ও অনেক দেশীয়দের নাশ ও রণশঙ্কার বিষয় চিন্তা করিতে লাগিলাম। আহা! যে সময়ে ঈশ্বর পৃথিবীর সীমাপর্য্যন্ত যুদ্ধের শেষ করিয়া শান্তি স্থাপন করিবেন, সে কেমন আনন্দজনক সময় হইবে।

 তথাপি শত্রুদের হস্তহইতে আমাদিগের দেশ রক্ষার্থে যে২ রণজাহাজ ও অন্যান্য রক্ষাস্ত্র ঈশ্বর প্রদান করিয়াছেন, তদ্বিষয়ে আমাদের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত।

 দক্ষিণদিগে ও অগ্নিকোণে অসীম সমুদ্রের মহাতরঙ্গ দৃষ্ট হইল। পাইলদ্বারা নানা দিগে গমনকারি বৃহৎ ও ক্ষুদ্র অনেক জাহাজ সমুদ্রেতে ব্যাপ্ত ছিল। কোন২ জাহাজ অতি দূর দেশে গমন করিতেছিল। অন্য কোন জাহাজ নানা দূর দেশস্থ উৎপন্ন দ্রব্যাদি বোঝাই করিয়া স্বদেশে ফিরিয়া আসিতেছিল। আর কতক জাহাজ শত্রুর অন্বেষণ করিতে যাইতেছিল, এবং অন্য কতক জাহাজ দুর্জয় সংগ্রামে লব্ধ দ্রব্যাদি লইয়া বন্দরে চলিয়া আসিতেছিল।