পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
এপিক্‌টেটসের উপদেশ।

কিন্তু উহাদের এইরূপ অবস্থান্তর ঘটিয়াছে মাত্র, উহাদের ত বিনাশ হয় নাই। উহা শুধু একটা পরিবর্ত্তন। সেইরূপ, বিদেশযাত্রাও একটা পরিবর্ত্তন। আর মৃত্যু—সে আরো একটু বেশি পরিবর্ত্তন। কিন্তু ইহা অস্তি হইতে নাস্তিতে পরিবর্ত্তন নহে,—এক অবস্থা হইতে আর এক অবস্থার পরিবর্ত্তন এই মাত্র।

এক্‌লা থাকা।

 ১। আপনাকে এক্‌লা বলিয়া মনে হয় তাহারি—যে অসহায় ও নিরুপায়। কেননা, একাকী থাকিলেই একলা থাকা হয় না। আবার বহুলোকের সঙ্গে থাকিলেই যে এক্‌লাভাব ঘুচে—তাহাও নহে। সেই জন্য, যাহারা আমার নির্ভরের স্থল—সেই ভ্রাতা হইতে, কিংবা পুত্র হইতে, কিংবা বন্ধু হইতে যখন আমি বিচ্ছিন্ন হই, তখনই আপনাকে এক্‌লা বলিয়া মনে হয়। সহরের এত জনতা, এত গৃহ অট্টালিকা, তবু সহরের মধ্যে গিয়া, আপনাকে কখন কখন এক্‌লা বলিয়া মনে হয়। অর্থাৎ মনে হয়—আমি অসহায়; মনে হয়, এমন সব লোকের মধ্যে আসিয়া পড়িয়াছি যাহারা আমার অনিষ্ট করিতে সঙ্কুচিত হইবে না। ভ্রমণে বাহির হইয়া যদি একদল তস্করের মধ্যে আসিয়া পড়ি, তখনও আমার মনে হয়—আমি এক্‌লা। বিশ্বাসী ধর্ম্মপরায়ণ হিতৈষী মনুষ্যের দর্শনেই আমাদের এক্‌লাভাব ঘুচিয়া যায়;— যে কোন মনুষ্যের দর্শনে তাহা হয় না। এ কথা সত্য—আমরা সামাজিক জীব, স্বভাবতই অন্যের সঙ্গে একত্র বাস করিতে আমাদের ইচ্ছা হয়। কিন্তু ইহাও দেখা আবশ্যক কিসে আমি নিজের উপর নির্ভর করিয়া থাকিতে পারি —নিজের সংসর্গেই পরিতৃপ্ত হইতে পারি। কেননা মনুষ্য একাকীই