পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তিন

 ১৯০৫ সালে যখন বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন চলিতেছিল সুভাষচন্দ্র তখন আটবৎরের বালক—কটকের প্রোটেষ্ট্যাণ্ট ইউরোপীয়ান ইস্কুলের ছাত্র। বারবৎসর বয়স পর্য্যন্ত সুভাষচন্দ্র এই স্কুলেই শিক্ষালাভ করেন। ১৯০৯ খৃষ্টাব্দে তিনি ‘র‍্যাভেনশ কলেজিয়েট’ স্কুলে ভর্তি হন। বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন কালে তিনি তাঁহার শ্রেণীতে সর্ব্বদা প্রথম স্থান অধিকার করিতেন। এইজন্য তিনি শিক্ষকগণের অত্যন্ত প্রিয়পাত্র ছিলেন। তাঁহার ন্যায় সচ্চরিত্র ও মেধাবী ছাত্র বিদ্যালয়ের গৌরব স্বরূপ। বাল্যকাল হইতেই সুভাষ চিন্তাশীল ও মেধাবী ছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দের রচনাবলী তাঁহার উপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। বালক সুভাষ বিবেকানন্দের আদর্শ চরিত্র অনুকরণ করিবার চেষ্টা করেন ও বিবেকানন্দের দরিদ্রনারায়ন সেবাকে নিজের জীবনের আদর্শ করিয়া লইবার সঙ্কল্প করেন। ধনীর ছেলে হইয়াও তিনি অত্যধিক ধর্ম্মপ্রবণ হইয়া পড়েন ও ত্যাগের আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। কৈশোরের এই সঙ্কল্প ও কর্ত্তব্যনিষ্টা আজিও সম্পূর্ণ অটুট রহিয়াছে। তাঁহার চরিত্র, মনোবল ও ত্যাগ দেশবাসীর নিকট অত্যুজ্জ্বল আদর্শ হিসাবে বর্ত্তমান।

 জোসেফ ষ্ট্যালিনের ন্যায় সুভাষচন্দ্রের বাল্যকালও ধর্মচর্চার পরিবেশের মধ্যে অতিবাহিত হয়। সুভাষচন্দ্র যখন সেকেণ্ড ক্লাসে পড়েন শ্রীযুক্ত বেনীমাধব দাস মহাশয় তখন ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক হইয়া আসেন। বেনীবাবুর আদর্শ চরিত্র দেবচরিত্র সুভাষকে অত্যন্ত মুগ্ধ করে। বেনীবাবুর চেষ্টাতেই তাঁহার ছাত্র শ্রীহেমন্তকুমার সরকারের সহিত সুভাষের বন্ধুত্ব স্থাপিত হয়। এই সময় হইতে সুভাষের চরিত্রের অদ্ভুত বিকাশ হইতে থাকে। ইতিপূর্ব্বে সুভাষচন্দ্র শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত ও স্বামীবিবেকানন্দের