পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উভয় সঙ্কট।

বড় সাহেবকে না জানাইয়া আর থাকিতে পারিতেছি না—আপনি এখানে লাসের কাছে থাকুন—আমি আসামীকে থানায় লইয়া যাই। সেখান হইতে বড় সাহেবকে টেলিফোঁ করি। আর একজন আপনার সঙ্গে রাখিতে পারিলে ভাল হয়, কিন্তু আমরা দুইজন না হইলে আসামীকে থানায় লইয়া যাইতে পারিব না।” সেই সময় একজন জমাদার সেইস্থানে আসিয়া উপস্থিত হইল। তাহাকে দেখিয়া আমি কহিলাম, “তবে জামদারকে আমার কাছে রাখিয়া যান।”

 জমাদারকে রাখিয়া সাহেব তখন আসামীকে লইয়া থানায় চলিয়া গেলেন। যাইবার সময় আমায় কহিলেন, “লাস যে ভাবে যেখানে পড়িয়া আছে—ঠিক্ যেন সেইভাবেই থাকে; কোন রকম নাড়াচাড়া করা যেন না হয়।”

 আমি উত্তর করিলাম, “সে কথা আমায় বলিতে হইবে না।”

 ইনস্পেক্টার সাহেব যে জমাদারকে আমার নিকট রাখিয়া গেলেন, তাঁহার নাম—কেনারাম ঘোষ। ঘোষজা মহাশয় অনেক দিন এই পুলিস-বিভাগে কার্য্য করিতেছেন, কিন্তু সেরূপ চালাক চতুর নহেন বলিয়া আর তাঁহার উন্নতি হইল না—জমাদারীতেই বুড়া হইয়া গেলেন। তবে প্রথম শ্রেণীর জমাদার—সব-ইন্‌স্পেক্টারী যে তাঁহার অদৃষ্টে আর ঘটিবে, তাহা ত বোধ হয় না। আমি তাঁহাকে কেনারাম দাদা বলিতাম। আসামী লইয়া সকলে চলিয়া গেলে পর, আমরা নীচের সদর ও খিড়কী দরজা বন্ধ করিয়া উপরে যে ঘরে হত্যাকাণ্ড হইয়াছে, সেই ঘরে আসিলাম। আমার মনে কেমন একটা খট কা জন্মিয়াছিল, আমি সেই কারণ কেনারাম দাদাকে কহিলাম, “কেনারাম-দা, খিড়্‌কী দিয়া অমন পলাইবার