পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
দারোগার দপ্তর, ১৬০ সংখ্যা।

বাক্য কখনই শুনিতে পাইতাম না। আমি ত এর ভিতর কোন অসাধারণ ব্যাপার দেখিতে পাই না। আসামীর আকার-প্রকার দেখিয়া আমার ত মনে সে রকম কোন সন্দেহ হয় না।”

 সাহেব সে উত্তরের স্বপক্ষে বা বিপক্ষে কোন কথাই কহিলেন না। এই সময় কেবল মাত্র আমায় কহিলেন,—“চল—সেই মাঠে গিয়া একবার দেখিয়া আসি।”

 আমি বড় সাহেবকে সঙ্গে লইয়া নীচে নামিলাম। আমাদের সঙ্গে ইন স্পেক্টার সাহেবও আসিলেন। খিড়কীর দরজা হইতে মাঠের উপর যে পায়ের দাগ আরম্ভ হইয়াছিল, আমি বড় সাহেবকে তাহা দেখাইলাম। আর সে পায়ের দাগ যে স্ত্রীলোকের, সে কথাও কহিলাম। সাহেব একবার ভাল করিয়া সে পায়ের দাগ দেখিলেন, কিন্তু কোন মতামত প্রকাশ করিলেন না। তার পর আমি সেই পায়ের দাগ ধরিয়া বরাবর গিয়া যে স্থলে অপর পায়ের দাগ আরম্ভ হইয়াছে, তাহাও সাহেবকে দেখাইলাম। আর সে পায়ের দাগ যে পুরুষের, সে কথাও কহিলাম। তার পর মাঠ পার হইয়া বস্তীর গলি দিয়া বড় রাস্তা পর্য্যন্ত সাহেবদ্বয়কে সঙ্গে করিয়া লইয়া গেলাম। সে রাস্তায় যে গাড়ীর চাকার দাগ ছিল, তাহাও বড় সাহেবকে দেখাইলাম। এই সময় বড় সাহেব কহিলেন, “পলাতকেরা যে গাড়ী করিয়া গিয়াছে, এ কথা কিরূপে স্থির করিলে বল? মাত্র গাড়ীর চাকার দাগ দেখিয়া সে কথা কিরূপে বিশ্বাস করা যাইতে পারে?”

 আমি তখন উত্তর করিলাম, “এই দেখুন, গাড়ীখানা দক্ষিণ দিক হইতে উত্তর দিকে আসিতেছিল, হঠাৎ এই গলির মোড়ে আসিয়াই মোড় ঘুরিয়া পুনরায় দক্ষিণ দিকে চলিয়া গিয়াছে।